বিশ্বনবীর কিয়ামত সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক ভবিষ্যৎ বাণী সিরিজে আপনাকে স্বাগতম।
বিশ্বনবী রমজান মাসে জুলফি বিশিষ্ট একটি উজ্জ্বল তারকা দেখতে পেলে আমাদের এক বছরের জন্য খাদ্য সংরক্ষক করে রাখতে বলেছেন। বিশ্বনবী কেন আমাদের এক বছরের খাদ্য মজুদ করতে আদেশ করেছেন, বিষয়টি বিজ্ঞান সম্মত ভাবে জানা দরকার।
পৃথিবী থেকে ১৮৪৩ আলোকবর্ষ দূরে একটি নক্ষত্র আরেকটি নক্ষত্র একে অপরকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। একে বাইনারী স্টার সিস্টেম বা যুগ্ম নক্ষত্র ব্যবস্থা বলা হয়। জ্যাতিবিজ্ঞানীরা এই নক্ষত্র ব্যবস্থার নাম দিয়েছে KIC 9832227. নক্ষত্র দুটির মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ এর প্রভাবে সময়ের সাথে সাথে কক্ষপথের পরিভ্রমণ ও দূরত্ব কমতে থাকছে। ফলাফল সরূপ যেকোন সময় এক মহাবিষ্ফোরণ এর সৃষ্টি হবে।
নক্ষত্রের মধ্যে সংঘর্ষ খুবই বিষ্ময়কর ও বিরল ঘটনা। যদিও মিল্কিওয়ে গেলেক্সিতে ২০ হাজার কোটি থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র আছে। জ্যাতিবিজ্ঞানীদের মতে আমাদের এই মিল্কিওয়ে গেলেক্সিতে প্রতি ১০ বছর অন্তর এমন ঘটনা ঘটে থাকে। তবুও এখন পর্যন্ত কেউই এধরণের প্রাকৃতিক ঘটনা স্বচক্ষে দেখতে সক্ষম হয়নি। ১ লক্ষ আলোকবর্ষের এই মহা বিশাল গেলেক্সিতে কোথায় কি হচ্ছে তার পুরো খোঁজ খবর রাখা মানবজাতির পক্ষে অসম্ভব।
সৌভগ্য বসত আধুনিক প্রযুক্তি উন্নত হওয়ায় এবং পৃথিবীতে থেকে নিকটতর হওয়ায় বিজ্ঞানীরা পরবর্তী এধরণের সংঘর্ষের স্থানটি পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বলে রাখা ভালো এধরণের বিষ্ফোরণকে রেড নোভা এক্সপ্লোশন বলা হয়।
প্রোফেসর লরেন্স মুন্নার এবং তার দল এপাচি পয়েন্ট ওবজারভেটোরি ও ওয়েমিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ২০১৩ সাল থেকে এর উপর গবেষণা করে আসছে।আমেরিকান এস্ট্রোনোমিকাল সোসাইটির ২২৯ তম বৈঠকে এই গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়।
অন্যদিকে গ্রেন্ড রেপিড মিশিগানের কেলভিন কলেজের এক গবেষক দলের গবেষণা থেকে জানা গেছে ২০২২ সালে এই যুগ্ম নক্ষত্র ব্যবস্থার দুটি নক্ষত্রের একত্রিকরণ ও বিষ্ফোরণ হবে।আরও বিষ্ময়কর ব্যাপার যে এটি খালি চোখে দেখা যাবে যা রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদিসের সাথে মিলে যায়।
নক্ষত্রদ্বয়ের মাঝে বিষ্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয় গামা রশ্মি অকল্পনীয় গতিতে চারিপাশে ছড়িয়ে পড়বে। যা আমদের আমাদের পৃথিবীর ওজন স্তরে আঘাত করে নিদারুণ মারাত্মক
ক্ষতি করবে।
অন্যদিকে আমাদের গেলেক্সিতে এক কোটি বছর পূর্বে এমন একটি সুপারনোভা বিষ্ফোরণ হয়েছিল যার গ্যাসীয় ও দাহ্য পদার্থের মধ্যেই আমাদের সৌরজগৎ ও পৃথিবী অবস্থায় করছে। নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে গ্যাসীয় ও দাহ্য পদার্থগুলো বর্তমানে আমাদের কোন ক্ষতি করছে না। যখন রেড নোভা স্টার বিষ্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা এই গ্যাসীয় ও দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আসবে তখন তা সক্রিয় হয়ে উঠবে। এরা মিলে আমাদের তাপরোধী ওজন স্তরের বারোটা বাজিয়ে দিবে।
ওজম স্তর হলো সেই স্তর যার জন্য আমরা সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা পাই। ওজন স্তরের জন্যই পৃথিবীতে জীবন ধারণ সম্ভব হয়েছে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণী অস্তিত্বে এসেছে।
ওজন স্তরের এ বিশাল ক্ষতির পর সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে আঘাত হানবে।স্বাভাবিক তাপমাত্রা যেখানে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সেখানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭০ ডিগ্রি থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পাবে। ফলাফলসরূপ:
#মাঠের ফসল ফলাদি নষ্ট হয়ে যাবে।
#নদ-নদী,খাল-বিল,পুকুরের পানি শুকিয়ে যাবে।
#ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাবে।
#বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিবে।
#গবাদি পশু,হাস-মুরগি,ভেজা-ছাগল,গরু-মহিষ সহ বন্য প্রাণীর অধিকাংস মারা যাবে।
#পৃথিবীর বিভিন্ন বনভূমিতে দাবানল সৃষ্টি হবে।
#এন্টার্কটিকা,গ্রীনল্যান্ড,সাইবেরিয়া অঞ্চল এবং সমুদ্রের উপর ভাসমান বরফ গলতে শুরু করবে।
#সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির স্তর কয়েক মিটার পর্যন্ত বেড়ে যাবে।
#যার ফলে নিচু এলাকাসমূহ যেমন বাংলাদেশের দক্ষীণাঞ্চল,মালদ্বীপ,ইন্দোনেশিয়াা দ্বীপসমূহ,মালোয়শিয়া, সিঙ্গাপুর,কুয়েত,ইরাকের বশ্রা ও কুফা নগরী সহ অন্যান্য এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে।

দুর্ভিক্ষের সময় এক বছরের খাদ্য জমিয়ে রাখার বিষয়ভিত্তিক হাদিসগুলো দেখা নিই।
হযরত খালেদ (রহঃ) বলেন, অতিসত্বর পূর্বদিক থেকে আগুনের তৈরী পিলারের ন্যায় এক নিদর্শন প্রকাশ পাবে।যেটা জমিনের সকলে দেখবে। তোমাদের কেউ এমন যুগ প্রাপ্ত হলে,সে যেন তার পরিবারের জন্য এক বৎসরের জানমাল প্রস্তুত রাখে।
[আল ফিতান: ৬৩৩]
হযরত কাসির (রহঃ) বলেন, রমযান মাসে আসমানে বিভিন্ন আলামত প্রকাশ পেতে থাকলে মানুষের মাঝে ব্যাপক এখতেলাফ দেখা দিবে। তুমি এ অবস্থাপ্রাপ্ত হলে সাধ্যানুযায়ী
খাবার মজুদ করে রাখো।
[আল ফিতান: ৬৩৪]
ইবনে মাদান (রহঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, যখন তোমরা আকাশে রমযান মাশে মাশরেক থেকে আগুণের কিছু পিলার প্রকাশ পেতে দেখবে,তখন সাধ্যমত খাবার জোগার করে রাখবে।কেননা তার পরবর্তী বৎসর হচ্ছে দুর্ভিক্ষের বৎসর।
[আল ফিতান: ৬৪৯]
এখন আসুন জেনে নেই উক্ত সময়ে রমজানের অবস্থা কেমন থাকবে। উক্ত রমজানের প্রথম দিকে আকাশ লাল লাল আভা তথা লালিমা দেখা যাবে। তারপর মধ্য রমজানে জিব্রাইল (আ) শব্দ করবেন ঠিক যেমনটা সালেহ (আ) এর সামূদ জাতিকে ধ্বংস করার সময় করেছিলেন।এখানে অনেকে বলতে পারেন বিষ্ফোরণের ফলে শব্দ হবে,কিন্তু আপনাদের জানিয়ে রাখা ভালো শূন্য মাধ্যমে শব্দ সৃষ্টি হয় না। তরল কঠিন অথবা বায়বীয় পদার্থ লাগে।আর মহাকাশ শূন্য। এরপর বিকট শব্দে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে। মানুষের শারীরিক দুর্বলতা,জীর্ণতা এবং বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে।
বিকট শব্দের সময় আমাদের কী করণীয় তা নিয়ে রসুল (সাঃ) বলেছেন "এটা অর্ধ রমযান মাসের জুমার রাত্রে প্রকাশ পাবে।যার কারণে ঘুমন্ত ব্যক্তিরা জাগ্রত হয়ে যাবে, দাড়ানো অবস্থায় থাকা লোকজন বসে যাবে,কুমারী নারীগণ ভয়-আতঙ্কে পর্দার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে।এটা হবে এক জুমার রাত্রিতে, এমন এক বৎসর যখন অধিকহারে ভূমিকম্প হবে। সুতরাং তোমরা জুমার দিন নামায আদায় করার সাথে সাথে ঘরে প্রবেশ করে দরজা-জানলা লাগিয়ে দিবে। নিজেদেরকে চাদরাবৃত করলেও কানকে সজাগ রাখবে। যখনই বিকট কোনো আওয়াজ শুনবে তখনই আল্লাহর দরবারে সেজদাবনত হয়ে যাবে এবং সুবহানাল কুদ্দুস, সুবহানাল কুদ্দুস বলতে থাকবে।"
[আল ফিতান: ৬৩৮]
আর ৭০ হাজার মানুষের বধির হওয়া ৭০ হাজার মানুষের বোবা হওয়ার হাদিসটি জইফ এবং জাল।বিস্তারিত জানতে হলে আমার ব্লগের সাথেই থাকুন। তথ্য আপডেট করা হবে।
রসুল (সঃ) এর হাদিস ও বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী উক্ত রমজানের শেষ ভাগে যেকোন রাত্রে রেড নোভা বিষ্ফোরণের জন্য আলো চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বলভাবে দেখা যাবে।
কা'ব (রহঃ) বলেন, "লালিমা প্রকাশ পাবে রমযান মাসের পাঁচ তারিখ বিশ তারিখের মধ্যে।আর বিকট শব্দ প্রকাশ হবে রমযানের পনের তারিখ থেকে বিশ তারিখের মধ্যে।অতঃপর এমন একটি তারকার উদিত হবে, যার আলো হবে চন্দ্রের আলোর ন্যায়।এরপর উক্ত তারকা সাপের ন্যায় কুন্ডুলি পাকাতে থাকবে। যার কারণে তার উভয় মাথা একটা আরেকটার সাথে মিলিত হওয়ার উপক্রম হবে।
[আল-ফিতান: ৬৪৩]
দুটি নক্ষত্রের বিষ্ফোরণের পর মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে আবার আরেকটি নক্ষত্র বিষ্ফোরণের পদার্থগুলো দিয়ে তৈরী হবে।যা মূলত সাপের মতো কুন্ডুলি পাকানোর মতো দেখা যাবে।
এসব কিছুর পর মধ্যপ্রাচ্যে সহ পুরো পৃথিনীতে রাহাজানি শুরু হয়ে যাবে।রমজান মাসের পরবর্তী মাসগুলোতে কি কি হবে রসুল (সাঃ) তার সব ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। রসুল (সাঃ) বলেন "রমযান মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে মতপার্থক্য দেখা দিবে, জিলহজ্ব মাসে রক্তপাত হবে। মুহাররম মাসে,মুহাররম কি? সে মাসে বিভিন্ন ধরণের মারামারি,হানাহানি,ঝগড়া-ফাসাদ চলতে থাকবে।একথাটি তিনি তিনবার বলেছেন।"
আমর ইবনে শুআইব হতে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন "রমযান মাসে বিকট আওয়াজ শুনা যাবে, শাওয়াল মাসে যোদ্ধাদের হুংকার চলবে, জিলক্বদ মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে যুদ্ধ বাধঁবে। সেই বৎসর হাজীদের রসদপত্র ছিনতাই করা হবে, এবং মিনার ময়দানে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। যা মধ্যে ব্যাপক গণ গত্যা ও রক্তপাত হবে। সে অবস্থায় তারা আকাবাতুল জামাবায় থাকবে।
[আল ফিতান: ৬৩১]
এমন কঠিন সময়ে আমাদের যা যা পদক্ষেপ নিতে হবে:
এই জুলফি তারকাটি ইমাম মাহদি যে অচিরেই আগমণ করবে তার অন্যতম প্রধান আলামত।ইহুদীদের আহলে কিতাব OLD TESTAMENT তে এ উজ্জ্বল তারকা নিয়ে অনেক ভবিষৎ বাণী করা হয়েছে। তাদের ধারণা এটি মসীয়াহ্ দাজ্জালের আগমনের ইঙ্গিত।অন্যদিকে খ্রিষ্টানরা একে ঈসা (আ:) নবীর পুনরায় পৃথিবীতে আর্বিভাবে চিহ্ন বলে মনে করছে।


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন