রাত বারোটা বাজতে দু-চার মিনিট বাকি।গান শুনতে শুনতে পেশাদার DJ এর মতো মাথা উপরে নিচে করছি।মাথার ভিতর ডোপামিন হরমোন যেন মধুর মতো চুয়িয়ে পড়তেছে।JUSTIN BIEBER তখন গাইতেছিলো।গান গুলোর লিরিক শুনতে শুনতে আমিও গায়কের মতো নিজেকে অনন্য অসাধারন কিছু মনে করছিলাম।যাই হোক, কিছুক্ষণ পড়ে নীল জগৎ-এ ঢুকলাম।প্রতিদিন-ই যাই; মানুষ অভ্যাসের দাস যাকে বলে আর কি!দেখতে দেখতে হস্তমৈথুন করে ফেললাম। টিস্যু দিয়ে কোনো মতে মুছে দিলাম ঘুম।ফজরের আযান কি জিনিস!জীবনে নিতান্তই কম এটা শুনার সুযোগ হইছে। সকাল আট টার দিকে উঠতাম স্কুলে যাওয়ার জন্য, তাছাড়া কখনো সকাল দশটা সাড়ে দশটায় ঘুম থেকে উঠা মিস যেতো না।
তথাকথিত মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।গানের প্রতি বিশাল অনুরাগ,ভালোবাসা জন্মে গেছে।পশ্চিমা বিশ্বের গান বলে কথা।গিটার কিনতে হবে, আর দেরি করা যাবে না।লোকে বলে,"সময় গেলে সাধন হবে না।"আবার হঠাৎ ক্লাসে একবার একটা রচনার টাইটেল দেখেছিলাম,"সময়ের চেয়ে অমূল্য সম্পদ আর নেই।"তো বুঝ মতে বাসায় দুই তিন দিন হালকা ভাংচুর করলাম, রাগারাগি করলাম।তারপর গিটার কিনে দিলো।গিটার নিয়ে সারাদিন অহেতুক শব্দ করতাম।ওদিকে আমার বাবা মা নামায পড়ে,কোরআন তিলাওয়াত করে। আশে পাশে আরো বাসা ছিলো,নামাযী-পরহেজগার মানুষ আছে।এসব কখনো পাত্তা দিতাম না। আমি আমার মতো। আমার বাপের টাকা দিয়ে গিটার কিনছি, বাজাবো, বেস। উদ্ধত বখাতে কাকে বলে কয় প্রকার ও কি কি? সব আমার মাঝে সুপ্ত ব্যক্ত ছিলো। স্কুলে সুন্দর মেয়ে দেখলে স্বাভাবিক ভাবেই নিজেকে ঠিক রাখতে পারতাম না। মেয়েরা পর্দা করে রাখলেও বদ নজর দিতাম। বুক দেখে, হিপস দেখে মেয়েদের শ্রেণীবিন্যাস করতাম,ছিহ্।এজন্য স্কুলে মেয়েদের দুই চোখের আগুণ ছিলাম আমি আর আমার ফ্রেন্ড সার্কেল।আরো কত্ত কি বলতাম, বলার উপেক্ষা রাখে না।বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বখাটে ফ্রেন্ড সার্কেল ছিলো আমাদের।কোন গেঞ্জাম লাগলে সবার আগে আমাদের ডাক পড়তো।এখনো মনে পড়ে ছোট খাটো কারণে বড় ভাই কি ছোট ভাই; হকি স্টিক, ক্রিকেট স্টেম্প কিংবা বাশেঁর কুঞ্চী সামনে যা পাইতো সবাই তাই দিয়ে মারামারি লাগিয়ে দিতো।আমার আরো একটি বড় সমস্যা ছিলো আমি অহংকারী ও স্বার্থপর মানুষ ছিলাম। বাবা-মার কোন আত্নত্যাগ এর কথা তো কখনো স্বীকার করিই নি বরং আশে পাশেও যারা পরিচিত ছিলো,যাদের সাথে বছরের পর বছর সম্পর্ক ছিলো তাদেরকেও নিজ স্বার্থের জন্য অপদস্থ করেছি,ফাসিয়ে দিছি।কোন দরিদ্র ফকির, ভিক্ষুক কে দুই পাঁচ টাকা দেওয়ার মতো মন মানসিকতাও আমার ছিলো না।সর্বশেষ আমার অন্যতম বড় একটি দোষ ছিলো নেশা। বাড়ি থেকে টাকা চুরি করে সপ্তাহে অন্ত্যত একদিন কিংবা দুই দিন নেশা করতাম।নিয়মিত সিগারেট পান করতাম।বন্ধুদের ছলনার বসে, আবেগ কৌতহল এর বসে গাঞ্জা সেবন করেছি, জুতার ঘাম পলিথিনে নিয়ে হাওয়া সেবন করেছি।পুলিশ পর্যন্ত অভিযোগ গেছিলো, কিন্তু তারা কুলাঙ্গার পুলিশ হওয়ায় বেঁচে গেছিলাম সে যাত্রায়।SSC পরীক্ষার টাইম এসে গেলো। আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। তেমন টেনশন নেই। আশেপাশে আমার ক্রমিক নং অনুযায়ী বন্ধুদের বুঝিয়ে দিয়েছি কখন কিভাবে পরীক্ষার হলে সাহায্য করবে।পরীক্ষা মোটামোটি ভালোই হইছে দেখে দেখে।
"মধ্যাহ্ন_আনন্দ"
পরীক্ষা শেষ করে কয়েক দিন বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করলাম।খেলাধুলা,খাওয়া দাওয়া,ঘোরাঘুরি সব করা হইছে।তো একদিন ফ্রেন্ড সার্কেলে কথা হলো চিল্লায় যাওয়া নিয়ে।আমি প্রথমে রাজি ছিলাম না।কিন্তু বন্ধুরা বললো কিছু দিন পর পর-ই মসজিদ চেঞ্জ করবে।নতুন নতুন জায়গায় যাওয়া হবে।আবার চিল্লায় নাকি আমাদের শহুরে অঞ্চলে কিছুটা দূরে নিয়ে যাবে বলেছেন এলাকার মুফতি সাহেব।আমার মাথায় এগুলা শুনে পরিকল্পনা আসলো, কিছু দিন পর পর-ই যদি মসজিদ চেঞ্জ করে তাহলে নতুন নতুন স্কুল, বাজার, এলাকা দেখা হবে।কিছু দিন পর পর-ই নতুন নতুন জায়গায় গিয়ে ভণ্ডামি করা হবে।তো আমার বন্ধুরাও অনেকে খুব ইচ্ছুক,আগ্রহী ছিলো।আমিও একমত হয়ে গেলাম সবার সাথে।পরের দিন দল বেঁধে মসজিদে গিয়ে সবাই মুফতি সাহেবের সাথে দেখা করলাম;বললাম আমরা সবাই চিল্লায় যেতে চাই।সব কথা শুনলেন।ওনার হাসি দেখে তখন মনে হয়েছিল দুনিয়াতেই ইনি জান্নাতের একটি বাগান পেয়ে গেছেন।ছলছল করতেছে তার দুই নয়ন যেনো জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম ওনার প্রতিক্রিয়ায়।মুফতি সাহেব আমাদের কে দীর্ঘ দিন ধরে চেনেন।ইনি প্রায় প্রায়-ই রাস্তায় আমাদের দাওয়াত দিতেন।আমি আবার ধর্মের সব বিশ্বাস কিছুরই বিশ্বাস করতাম মন প্রাণ থেকে।বিশ্বাসে কোন কমতি ছিলো না।ধর্মতত্ত্ব নিয়েও হালকা আগ্রহ আছে।স্কুলে, মায়ের মুখে অনেক নবীর গল্প শুনেছি,শুনেছি আমার নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনকাহিনী।কখনো এগুলো শুনতে খারাপ লাগেনি।খারাপ লেগেছে ধর্ম পালন করতে,যার ছিটেফোঁটাও আমার মাঝে ছিলো না।আল্লাহ্ এর পথে বের হওয়ার দুই দিন আগে বাসায় মা-বাবাকে বল্লাম আমি চিল্লায় যাবো।তারা দুজন-ই এমন দ্রুত আমার দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালেন যেন আমাকে কয়েক বছর ধরে দেখেন না।আমার মা হেসে দিলেন,সাথে ছিলো এক সাগর আবেগ।বাবা মুচকি মুচকি হাসলেন আর বল্লেন কবে যাবি?কি কি লাগবে?আমার সাথে কারা কারা যাবে?,কোথায় যেতে পারে?প্রায় আধঘন্টা আলোচনা হলো।পরের দিন সকাল থেকে বাবা মা আমার জন্য জিনিস ঘুছিয়ে দিতে শুরু করলেন। কোনটা লাগবে কোনটা লাগবে না,তা নিয়ে মা-বাবার মাঝে অহেতুক মিষ্টি ঝগড়া লেগে গেলো।যাওয়ার আগের দিন রাতে বাবার কাছে টাকা চাইলাম।বন্ধুরা যা নিছে আমি তার থেকে আরো বেশি টাকা চাইলাম।কিন্তু সেদিন জীবনে প্রথম আমার বাবা আমার কাছে কারণ জানতে না চেয়েই পাঁচ হাজার টাকা ধরিয়ে দিলেন।আর বললেন যাওয়ার পর আরো লাগলে ফোনে বলিস,পাঠিয়ে দিবো। আমি তো অসম্ভব ফূর্তি নিয়ে আমার রুমে গিয়ে লাফালাফি শুরু করলাম। উফফ কি যে মজা!
"নূরের_পাখা_বিছানো_দাওয়াতের_পথ"
তো ১৩ই মার্চ, সকালে আমরা প্রায় ৩০ জন ঢাকা,কাকরাইল এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।বখাটের দল বাসের পিছনের ছিটে।হাসি ঠাট্টা আর পাগলামি ছাড়া কিচ্ছু করতেছি না।ওদিকে মুফতি সাহেব একেক পর এক অনর্গল অজিফা শরীফের হাদিস বলে যাচ্ছেন।বার বার পিছনে এসে আমাদের শান্ত করে যান।কিন্তু কে শুনে কার কথা।তিন চার বার মুফতি সাহেব মানা করার পর আচমকা ধমক দিলেন।উত্তেজিত হয়ে চিল্লাতে শুরু করলেন।তারপর ভালোই চুপ হয়ে গেলাম আমরা।আমি উল্টো রাগ নিয়ে মনে মনে মুফতি সাহেবকে ধমকাইতে থাকলাম।ইসসস্! আনন্দ টাই মাটি করে দিলো।প্রায় দুই ঘন্টার যাত্রায় আমরা কাকরাইল গিয়ে পৌছালাম।কাধে হাতে বেগ নিয়ে লাইন দিয়ে সবাই মসজিদে ঘুকলাম।এরপর আমার চোখে দেখা এক বিষ্ময়, অনুভুতির বিষ্ফোরণ ঘটলো।কোনো দিন এত যুবককে এক সাথে এক জায়গায় নবীজীর সুন্নতের পোষাকে দেখিনি।সবাই সমবয়সী, SSC পরীক্ষা দিলো মাত্র।সবাই বিভিন্ন প্রযোজনে এদিক সেদিন যাওয়া আসা করছে।যেনো আল্লাহর ঘর মসজিদে জান্নাতের বাগান হাওয়ার এলোপাথাড়ি দুলছে।আমি কিছুক্ষণ এদিক সেদিক ঘুরে মসজিদটা দেখতে শুরু করলাম।সত্যিই বিশাল বড় মসজিদ।ওদিকে আমার ডাক পড়ছে।সকল ছাত্রদের একত্রিত করে বসানো হলো।এক হুজুর আমাদের নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন।আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি এবং এর থেকে পরিত্রাণের উপায় বললেন।প্রতিটি কথায় ছিলো মিষ্টতা।বললেন আমার কাছে এই ধর্ম পৌছাবার ইতিহাস, সাহাবা, তাবেইন দের দেশ দেশান্তরে আল্লাহ্-এর বাণী নিয়ে ক্লান্তিহীন সফরের ইতিহাস।বললেন নবীজীর জীবনের অসংখ্য কষ্টে ঘেরা মুহূর্তগুলো।কাফেররা আমার নবীকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, গালি-গালাজ,নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে,তাঁকে কখনো কবি বলেছে,কখনো যাদুকর বলেছে,এমনকি পাগল পর্যন্ত বলেছে।তায়েফের ময়দানে অগণিত পাথরের আঘাতে রক্তাক্ত হওয়া, ক্ষুদার জ্বালায় পেটে পাথর বাধা,উটের নাড়ী ভুড়ি দিয়ে শ্বাসরূদ্ধ করে হত্যা করার চেষ্টা,বদরের যুদ্ধে দাঁত মোবারক শহীদ হওয়া,লোহার শিরস্ত্রাণ আঘাত পাওয়ায় কপাল থেকে ফিনকী দিয়ে রক্ত নির্গত হয়ে আসা কত কিই না তাঁর জীবনে ঘটেছে।খেজুরের চাটাই তে শয়ন করতেন, পিঠে দাগ বসে যেতো।পরিধান করার জন্য তেমন কাপড় ছিলো না।ছিড়ে গেলে কাপড় বাদ দিতেন না,নিজে নিজেই তালি দিয়ে আবার পরিধান করতেন।এই মহামানবের জন্মের পর বাবার দেখা হয়নি,মাও মারা যায় হেসেখেলে বেড়ানোর সময় মাত্র ছয় বছর বয়সে।আট বছর বয়সে আবার দাদাকেও হারান।সবচেয়ে কাছের ও পাশের স্ত্রীকে হারানো,তারপরের বছর ই অতি কষ্টে লালন পালন করা চাচা আবু তালেব এর মৃত্যু, হযরত হামযা রা: এর কলিজা এফোঁড়-ওফোঁড় করার লোমহর্ষক ঘটনা সব মিলিয়ে তিলে তিলে আমার নবীজীর জীবন অসম্ভব কষ্টে দুঃখে পরিপূর্ণ ছিলো।এ ব্যক্তি আমার জন্য ভর দুপুরে দুহাত আকাশে তুলে ঘন্টার পর ঘন্টা প্রার্থনা করতেন।এ ব্যক্তি দীর্য সিজদাহ দিতেন আমার মুক্তি কামনার জন্য।এই ব্যক্তি জিব্রাইল (আঃ) এর কাছে তাঁর উম্মতের জাহান্নামে যাওয়ার কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন,সবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আত্নযন্ত্রণায় কান্নায় ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলেন।আর তাঁর উম্মত হয়ে আমি কিনা প্রতিটা মুহূর্তে পাপ লীলা চালাই।বিবেকে লাগতেছিলো কিছুটা হলেও। আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম হুজুরের কথাগুলো শুনে।আমাদের ঘোষণা এলো, আমরা কিশোরগঞ্জ যাবো।যোহরের নামায পড়লাম সবাই।প্রায় হাজারখানেক মানুষ। এ প্রশান্তি ভুলবার নয়।প্রতিটা সিজদায় শুধু ভালোলাগা।এক প্লেটে পাঁচ জন। প্রথমে ঘেন্না লাগতেছিলো,কিন্তু আশেপাশে দেখি সবাই এভাবেই খাচ্ছে।তাই কিছু না ভেবে খেতে বসলাম।খিচুড়ি, গোশত খেয়ে আবার বাসে উঠলাম কিশোরগঞ্জ এর উদ্দেশ্যে। এবার আমরা হালকা চুপ হয়ে আছি।আধঘন্টা বাসে বসে থাকার পর চোখ ভারী হয়ে পড়ছিলো।ঘুমিয়ে গেলাম।অনেকক্ষণ পর আমার বন্ধু আমাকে ধাক্কিয়ে ঘুম থেকে উঠালো।আসরের নামায পড়বে, বিশ্রাম নিবে, হালকা নাস্তা খাবে সবাই।কিশোরগঞ্জ জেলার এক মসজিদে গিয়ে পৌছালাম রাত সাতটার কিছুক্ষণ আগে।মাগরিবের কাযা নামায পড়লাম।তারপর মাসোয়ারা শুরু হলো।গ্রুপিং করা হলো।প্রতি গ্রুপে ৫ জন করে ৫ টি গ্রুপ তৈরী করা হলো।বাজার-রান্না, মসজিদ পরিস্কার, এলার্ন-আমল মনে করিয়ে দেওয়া-জানমাল এর দেখাশুনা করা ইত্যাদি একেক গ্রুপে একেক দায়িত্ব পালন করতো প্রতিদিন।এশার নামাযের পর আমাদের শুয়ে পড়তে বলা হলো।
"হাস্যরসাত্তক_সূচনালগ্ন"
ভোর সাড়ে পাঁচ টা।প্রচুর বিকট শব্দের আযান কানের ভিতর আওয়াজ আসতে শুরু করলো।আমি বিশাল বিরক্ত হয়ে গেলাম,সবার সাথে আমাকেও মুফতি সাহেব ধাক্কিয়ে ডাকতে শুরু করলেন।আমি ঘুমের দান্ধায় ওনাকে বকে দিলাম।হায় হায়,এটা কি করলাম? হুজুর মাইন্ড করছে,আবার লজ্জাও পাইছে।আমার বন্ধু যারা ঘুম থেকে উঠছে তাদের পাঠিয়ে দিলেন। পড়ে ওরা কাতুকুতু দিয়ে হাসিয়ে হাসিয়ে,পাগলামি করে বিছানা থেকে উঠালো।এতো রাগ উঠতেছিলো যে মসজিদের ভিতর ওদের দৌড়ানি দিলাম।সাথী একেকটা এই কান্ড দেখে হাসতে হাসতে কাত হয়ে গেলো।ব্রাশ নিয়ে বের হলাম।আরেহ্,এতো সুন্দর কুয়াশা আবৃত সকাল।মুত্র ত্যাগ করে,অজু করে সুন্নত,ফরজ নামায পরলাম।তারপর মসজিদের ইমাম সাহেব ওয়াজ শুরু করলেন।ওদিকে আমার গ্রুপ-এক বাজারে গেলো,আমিও এই গ্রুপে ছিলাম রান্না বান্নার দায়িত্বে।বাজার নিয়ে মসজিদে আসলাম।এখন সবজি, মুরগি কাটতে হবে।পিয়াজ কাটতে গিয়ে একেক জন কান্নাকাটি শুরু করে দিলো।এগুলা দেখে বন্ধু আরিয়ান মহোদয়, ছবি তুলে ফেসবুকে স্টেটাস দিয়ে দিলে"আমার বন্ধু তৌহিদের আজকে ব্রেকআপ হইছে,সবাই দোয়া করবেন ওর জন্য।" এটা বুঝতে পেরে তৌহিদ দৌড়ানি দিলো আরিয়ান কে।মোটা মানুষ ছিলো আরিয়ান।ভাই ভাই করতে করতে পোস্ট টা ডিলিট করে দিলো।ওদিকে আরেক বন্ধু ফোনে আম্মুকে কল দিয়ে কথা বলতেছে।নাক দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে কান্না করতে করতে।"আম্মু,, আমি তোমাকে ছাইড়া এত্ত দিন কেমনে থাকমু?"সেই ভোর সক্কালে ঘুম থেকে উঠাইছে, অজু করাইছে ঠান্ডা পানি দিয়া" "আম্মু আম্মু, এখনো খাবার দেই নাই,পেটে ব্যাথা করতেছে ক্ষুদার।" "আম্মু.........!" এগুলা দেইখা মুফতি সাহেব ফোন কাটতে বললেন। আর তারপর ফোন নিয়ে চলে গেলেন।পোলাটা তো হাহাকার শুরু করে দিলো। এখন কি করবে?!? মেজাজ হট আমির সাব(মুফতি সাহেব)এর।আমরা এসব কান্ড দেখে তো পুরো হতভম্ব।সকালে খাওয়ার সময় এক প্লেটে পাঁচ জন।অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে।ভালো লাগতে শুরু হলো এক প্লেটে পাঁচ জন খাওয়া।তালিম করা হলো।আজকে নামাযের ফজিলত সম্পর্কে পড়া হচ্ছিলো।নামাযের এত উপকার, পুরস্কার আগে জানা ছিলো না।যোহরের আযানের আগে সবাই আমির সাবকে আটকে ধরলো,পুকুরে গোসল করার অনুমতি দিন!সবার এতো আকুতি দেখে আমির সাব আর না করতে পারলেন না।প্রায় ১৮ জন পুকুরে গেলাম গোসল করতে।পুকুরে গিয়ে লাফালাফি আর সাতার কাটতে কাটকে একেক জনের লুঙ্গি গামছা পানিতে হারিয়ে গেছে।দুই জন অসহায় হয়ে পড়া বন্ধু চুপ করে পুকুরের কোণে দাড়িয়ে আছে। নিচে কোন সুরক্ষা কবজ নেই।মাথা নষ্ট করার মতো হাসাহাসি।পরে পাড় থেকে লুঙ্গি,প্যান্ট দেওয়ার পর শান্তুি পেলো ওরা।যোহরের নামায পড়ার সময়, এক জনে বৈঠকে পা ভেঙে বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারছে না।নামায পড়ার অভ্যাস নেই। ইসসস্, কখন সালাম ফিরাবে। শরীর কাপতেছে ব্যাথায়। হায় হায়, কি রেখে কি করবে? নিরুপায়!অবশেষে সালাম ফিরালো আর ছেলেটা আস্তে করে পা খুলে বসে আরাম পেলো।ওদিকে আজ রাতে এলাকার অন্যতম সুখ্যাত মুহাদ্দিস কে দাওয়াত দিলেন আমাদের আমির সাব।বিষয় হলো কবরের আলোচনা করা।যে বক্তব্যটি আমাদের হেদায়েত এর পথে আরেক পা এগিয়ে যাওয়ার দিশারী ছিলো!
"রোমাঞ্চকর_ভীতি_সঞ্চার"
এশার নামাযের পর মুহাদ্দিস সাহেব ওয়াজ শুরু করলেন।মৃত্যুর ভয়াবহতা বর্ণনা করলেন।আল্লাহ্ এর বন্ধু বিশ্বনবী এর মৃত্যুর হৃদয় বিদারক ঘটনা বললেন।তাঁর মৃত্যুর সময় এমন যন্ত্রণা হচ্ছিলো যেনো তাঁর বুকে উহুদ পাহাড় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।এই বসুন্ধরার সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আমার মতো প্রথম শ্রেণীর পাপিষ্ঠের কী অবস্থা হবে?কবরের প্রথম আযাব হবে মাটির চারিপাশে থেকে চাপিয়ে দেওয়া যা দুপাশের পাজরের হাড়কে একত্রিত করে দিবে এবং এশাস্তি থেকে কেউই রেহাই পাবে না।নবীজী বলেন যদি কেউ এই চাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো হতো তবে সে হতেন আল্লাহ্-এর ওলী সাদ ইবনে মুয়াজ(রাঃ),এই ব্যক্তির মৃত্যুতে আল্লাহ্-এর আরশ কেপে উঠেছিলো।এই মহা মানবের মৃত্যুতে আসমানের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয় এমনকি ৭০ হাজার ফেরেশতা এই ব্যক্তির জানাযায় অংশগ্রহণ করে।তবুও এই যন্ত্রণাদায়ক চাপ থেকে তিনি রেহাই পান নি।এই ব্যক্তি নবীজীকে সর্বোত্তম পন্থায় মেহমানদারি,আতিথেয়তা করেন।মদিনাতে সর্বসময় নিরাপত্তা দিয়েছেন,এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত নিরাপত্তা দানকারী ছিলেন এই ব্যক্তি।হুজুর বললেন, কবরে আমাদের পাঁচটি বিষয়ের সম্মুখিন হতে হবে।প্রথমত আমাদের কবরে এমন পরিবেশ করে দেওয়া হবে যেন মনে হবে আসরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাচ্ছে।একজন নামাযী ব্যক্তি এই সময় নামাযের প্রস্তুতি নিতে চাইবে।অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে, অন্যদিকে একজন বদকার,কাফের, মুশরিক এই পরীক্ষায় কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করবে না।কবরে মুনকার নাকির আকস্মিক ভাবে এসে ভয়ংকর শব্দ শুরু করে দিবে।তাদের দেখে, তাদের আওয়াজ শুনে মানুষ এতোটা আতঙ্কগ্রস্ত হবে যে দুনিয়ায় পুরো জীবনে যেকোন কষ্টদায়ক বা খারাপ মুহূর্তের একত্রিকরণের আতঙ্কও এর সামনে নিতান্তই তুচ্ছ।এরা কোন বাড়তি কথা শুনতে চায় না।সোজা আমাদের তিনটি প্রশ্ন করা হবে,তোমার রব কে?তোমার দ্বীন কি?তোমার নবী কে?আমিও এই তিনটি প্রশ্নের বিষয়ে ক্লাস ফাইভে পড়েছিলাম। কিন্তু আবার নতুন করে শুনলাম যে আরও একটি প্রশ্ন করা হবে।"তুমি এগুলো কোথা থেকে শিখেছো?" উত্তর হবে কোরআন পড়েছি এবং বুঝে সে অনুসারে আমল করেছি।হুজুর সব আরবিতে বললেন।হুজুর সাহেব অতঃপর এমন সব হাদিস বললেন যা শুনে আমি রীতিমতো কেপে উঠি।শরীর শিউরে উঠে।এতো প্রকট ভয় জীবনে খুব কম পেয়েছি। বদকার ব্যক্তির পাপ একটি নিকৃষ্ট ও জঘন্য রূপধারণ করে কবরে আসবে।তার হাতে থাকবে লোহার হাতুড়ি যেটি দিয়ে আঘাত করার পর পুরো দেহ মাটির সাথে মিশে সমতল হয়ে যাবে।ধুলোয় পরিণত হবে দেহ।আবার সে দেহ আগের আকৃতিতে ফিরে আসবে।ফেরেশতা পুনরায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করবে।এভাবে অনবরত চলতেই থাকবে।ফেরেশতা কানা বধির করে কবরে পাঠানো হবে যাতে মানুষের আর্তনাদ শুনে আযাব দিতে মায়া বোধ না করে।আযাবপ্রাপ্ত ব্যক্তির আর্তনাদ চিৎকার সকল প্রাণী শুনতে পাবে শুধু মাত্র মানুষ জ্বীন ব্যতিত।এমন সাপ দংশন কবরে যে সাপ পৃথিবীতে একটি শ্বাস ফললে সকল তৃণ,উদ্ভিদ মারা যাবে।এমন বিছানা দেওয়া হবে যা আগুণে ধাউ ধাউ করে জ্বলমান অবস্থায় থাকবে।এমন ফেতনা, এমন হিংস্র কর্কশ বিকট শব্দ হবে যা আদম (আঃ) থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত সব চেয়ে বড় দাজ্জালের ফেতনার ন্যায় হবে।নবীজী বলেন, তোমরা যদি কবরের ফেতনার আওয়াজ শুনতে তাহলে কখনো কাউকে কবরস্থ করতে না।আরও বলেন,কবরের ভিতর এমন ভয়ানক আযাব আছে যা শয়তান দেখলে সেও কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে যেতো।এসব শুনার পর কি নিজেকে স্থির রাখা যায়।একেক টি হাদিস হুজুর সাহেব হুংকার দিয়ে দিয়ে বলতেছিলেন।চারিদিকে পিনড্রপ সাইলেন্স।হুজুর জানতেন আমরা এসময়ে এখন বয়ঃসন্ধিকালে। পর্ণগ্রাফি, হস্তমৈথুন, বদ নজর, অশ্লীল বাক্যালাপ সবি করে এসময়ের ছেলেরা। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আরো কিছু হাদিস শুরু করলেন।
হুজুর বললেন হস্তমৈথুন বর্তমানে কতটা প্রচলিত হয়ে গেছে আমাদের যুব সমাজে।হাশরের ময়দানে এই পাপিষ্ঠদের আল্লাহ্-এর কাছে নিয়ামতের জন্য জিজ্ঞাসায়িত করা হবে।যতটুকু বীর্য সে অহেতুক আরামের জন্য ফেলেছে তা তার সামনে আনা হবে এবং বলা হবে এগুলো থেকে মানুষের জন্ম দাও।কোন মাবনই এটা করার যোগ্যতা রাখে না।রাসূল (সাঃ) বলেছেন,যে ব্যক্তি স্বীয় হস্তের সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, সে অভিসপ্ত।আরও বলেন, কিছু লোক এমন ভাবে পুনরুত্থিত হবে যেন তাদের হস্তদ্বয় গর্ভবতী।আল্লাহ্ পাক এক দল লোককে শাস্তি দিবেন, যারা তাদের যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা করত।
বদনজরকারীর চোখে গলিত সীসা ঠালা হবে। আগুণের সরু লৌহ চোখে ডুকিয়ে দেওয়া হবে। হস্তমৈথুন, স্বপ্নদোষ এর পর আমরা পবিত্র হই না বলে তিনি আরও একটি ভয়ংকর কাহিনী বললেন।
একদা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) এক প্রতিবেশীর জানাযাতে যোগদান করলেন।লাশ কবরে নামানোর সময় বিড়ালের ন্যায় একটি অদ্ভুত জানোয়ার কবরের ভিতরে বাইরে লম্বঝম্প করে লাশ কবরে নামাতে বাধার সৃষ্টি করতে লাগল।সেটিকে তাড়াবার জন্য সকলে মিলে চেষ্টা করলো।কিন্তু কোন প্রকারই দূর করা গেল না।ব্যর্থ হয়ে অন্যত্র গিয়ে কবর খনন করা হল।সেখানে গিয়ে জন্তুটি ভয়ানক উৎপাত করতে লাগল।সেটিকে মারতে গিয়েও সর্ব প্রকার চেষ্টা ব্যর্থ হল।অগত্যা বাধ্য হয়ে অন্যত্র গিয়ে তৃতীয় কবর খনন করা হল।সেখানে গিয়েও জন্তুটি আরও বেশী উপদ্রব শুরু করল।নিরুপায় হয়ে সবাই তাড়াতাড়ি তৃতীয় কবরেই তাকে দাফন করতে লাগলো।দ্রুতপদে সেখানে হতে প্রস্থান করলেন ইবনে আব্বাস (রাঃ) দাফনান্তে কবর হতে বজ্রবৎ ভীষণ এক আওয়াজ বের হয়েছিল।ইবনে আব্বাস (রাঃ) এবিষয়ে জানার জন্য তার স্ত্রীর কাছে জিজ্ঞেস করলেন।তার স্ত্রী উত্তর দিল,সহবাসের পর তিনি ফরজ গোসলে অবহেলা করতেন,এতে তার ফজরের নামায কাযা হয়ে যেত।এছাড়া তার অন্য কোন পাপ আমি কখনো দেখি নাই।
হায় হায়! এসব হাদিস শোনার পর আমার পর্ণগ্রাফি দেখে, হস্তমৈথুন করে ঘুমিয়ে পড়ার কথা স্বাভাবিক ভাবেই মনে পরলো। ফজরের নামায তো এমনিতেই পড়তাম না। ফরজ গোসলও করিনি কখনো। হায় হায়! আমার পাপের ঝুড়ি আকাশচুম্বী হয়ে গেছে ।যেতো তেনো পাপ নয়। কঠিন কঠিন কবিরা গুণাহ।খুব কষ্ট হলো চিন্তা চেতনায়।কারো সাথে কথা বলিনি সে রাতে। মাথা নষ্ট হয়ে গেলো হুজুর সাহেবের বয়ান শুনে।ঘুম আসছিলো না, ঘুমাতে খুব কষ্ট হয় সে রাতে।
"হুরের_প্রেমে_মাতোয়ারা"
প্রথম কয়েক দিন আমাদের শুধু নামাযের নিয়ম,সূরা,মাসআলা,মাসায়েল,এলার্ন,গাস্থের আদব,বয়ান এগুলো শেখানো হলো,চর্চা করানো হলো।বিকেলে শুধু হালকা মজা করতে পারতাম।কিন্তু যে চিন্তা নিয়ে চিল্লায় আসছিলাম সেটা আল্লাহ্-এর রহমতে আদও করা হচ্ছে না।আজ ২য় মসজিদে চিল্লার ৫য় দিন।মসজিদের ইমাম সাব আমাদের জান্নাতী হুরের বিবরণ দিচ্ছেন।নারীবিকারগ্রস্থ আমার জন্য এটি ছিলো অনন্যা একটি বয়ান।ভাবতে অবাক লাগলো ইসলাম কত সুন্দর।কতটা ন্যায়পরায়ণ ভাবে আমাদের কর্মফল এর পুরস্কার দেওয়া হবে।প্রতিটি ভালো কাজে সওয়াব আছে।নবীজীর সুন্নত মুচকি হাসি দিলেও নাকি আমার আমলনামায় সওয়াব ভরে দেওয়া হবে।দুনিয়ায় নারীর প্ররোচনা,ছলনা থেকে নিজেকে হেফাজত করলে জান্নাতে তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে।ইমাম সাব বললেন হুরদের অকল্পনীয় সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা।হুরদের পা হতে হাঁটু পর্যন্ত সৌন্দর্যময় জাফরান রং-এ রঞ্জিত এবং হাঁটু হতে মাথা পর্যন্ত কর্পুর,মেশক ও আম্বরের মিশ্রণে সুবাসিত। হুর যদি একবার দুনিয়ার দিকে তাকায় তাহলে পৃথিবীর সকল মানুষ, প্রাণী পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। স্বামী স্ত্রী দীর্ঘক্ষণ মিলন সুখ উপভোগ করবে।হুরদের সাথে যতই যৌন মিলন করা হবে ততই তাদেরকে নতুন কুমারীর ন্যায় অনুভূত হবে।একটি হুর যদি সাত সমুদ্রে সামান্য পরিমাণ থু থু নিক্ষেপ করে তাহলে সমুদ্রের সমস্ত পানি মধুর ন্যায় সুস্বাদু হয়ে যাবে।হুরদের মাথার একটি চুলও যদি এ দুনিয়ায় এসে পড়ত,তবে তার আলোচ্ছটায় দুনিয়াবাসী আলোকিত হয়ে যেত।সর্বশেষে যে জান্নাতে প্রবেশ করবে সে ৭০ টি হুর পাবে এবং এ দুনিয়ার চাইতে ১০ গুণ বড় জান্নাত দেওয়া হবে।দাওয়াত এর কাজে অসীম আত্নত্যাগ এর জন্য আমাদের মহানবী হয়রত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম ২৫ লক্ষ হুর পাবেন।আরও শুনলাম তিন চিল্লার মাধ্যমে যে দ্বীনের দায়ী হয়ে যাবে তাকে দেওয়া হবে ৭০ হাজার হুর।অভাবনীয়।
হুজুর বলেন, হযরত রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন-আল্লাহ্ তায়ালা জান্নাতুল আদন সৃষ্টি করার পর,ফেরেশতা হযরত জিব্রাইল আঃ কে ডেকে বলবেন,হে জিব্রাইল,আমি আমার বান্দাগনের জন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছি,তা তুমি একবার দেখে আসো! অতঃপর,হযরত জিব্রাইল আঃ আল্লাহ্ তায়ালার হুকুম মোতাবেক জান্নাতের মধ্যে চতুর্দিক ঘুরাঘুরি করে দেখতেছিলেন!এমতাবস্থায় হযরত জিবরাইল আঃ কে দেখে একজন জান্নাতী হুর হেসে ফেলবেন। জান্নাতী হুরের দাঁতের ঝলকে জান্নাতুল আদন আলোকিত ও উদ্ভাসিত হয়ে গেলো,এতে হযরত জিব্রাইল আঃ বেহুশ হয়ে পড়লেন!সুবহানাল্লাহ!
৬০০ ডানাবিশিষ্ঠ ফেরেশত জিব্রাইল (আঃ) হুরকে দেখে যদি এমন প্রতিক্রিয়া হয় তাহলে আমার কি অবস্থা হবে?
এসব শোনার পর আমারই তো হুস নেই। কি বলে এগুলা হুজুর! বয়ান শেষে ফাজায়েলে আমাল থেকে হুরের বর্ণনা পড়লাম। অনলাইন থেকে পিডিএফ বই ডাউনলোড দিলাম, "কারা জান্নাতী কুমারীদের ভালোবাসে" বইটি এক দুপুরে পড়ে আবেগে আত্নহারা আমি।
জান্নাতে একটি হুর দেওয়া হবে যা অন্ধ থাকবে।কোন চোখ থাকবে না।জান্নাতী ব্যক্তি বলবে, হে আমার পালনকর্তা, এতো সুন্দর দৃষ্টিনন্দন হুর কিন্তু এর চোখ নেই কেনো ? আল্লাহ্ বলবেন দুনিয়াতে তুমি আমার ভয়ে কোন পরনারীর দিকে তাকাও নি।তাই আমি তোমার জন্য এমন এক হুর দিচ্ছি যার প্রথম চাহনি হবে তুমি।অতঃপর আল্লাহ্ সেই হুরকে দৃষ্টিশক্তি দিবেন।সাথে সাথেই জান্নাতী ব্যক্তির দিকে হুর চোখ তুলে তাকাবে।দুজনেই উৎফুল্লে একাকার হয়ে যাবে।
বেস,সেদিনই নিয়ত করলাম,ভালো হয়ে যেতে হবে। কোরআনের আয়াত পেলাম মুহররম নারীদের লিস্ট।তাদের ব্যতিত কারো দিকে তাকানো যাবে না।যেই কথা সেই কাজ।দিনের পর দিন নিজের সাথে যুদ্ধ করতে শুরু করলাম।আস্তে আস্তো নারীর দিকে তাকানো আয়ত্ত করলাম।এই কাজটা ছিলো আমাদের জীবনে মনের বিরুদ্ধে করা সবচেয়ে কঠিন কষ্টসাধ্য কাজ।যখনই উত্তেজনা উঠতো গিয়ে বই খুলে হুরের বিবরণ পড়তাম।আবেগ মিশে গেলো হুরের সাথে। যেভাবেই হোক এদের পেতে হবে,দুনিয়ার আমল দ্বারা হুরের সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে হবে।
"আল্লাহ্_কত্ত_ভালো"
কোরআনের কথা নিয়ে আমির সাব আমাদের বলতেছিলেন।কোরআন নাজিলের ইতিহাস,কোরআন নাজিলের বিষয়ভিত্তিক কারণ,কোরআন মানবজাতির জন্য মুক্তি,মাক্কি সূরা,মাদানি সূরা,কোরআনের ভাষাশৈলী,কোরআনের সাহিত্যগত বৈশিষ্ট্য,কোরআন পড়ে মনীষীদের ধর্মান্তরিত হওয়া ইত্যাদি।এসময়ে আমাদের আমির সাব এমন এমন কিছু আয়াত পাঠ করে শুনালেন যা শুনে অন্তর বিগলিত হয়ে পড়লো।মানবজাতির জন্য আল্লাহ্ এতটাই কোমল! অভাবনীয়!
সূরা বাকারার ২৪৫ তম আয়াত আমার মওলা বলেন: "কে আছে, যে আল্লাহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি এজন্য তাকে বহু গুণে বাড়িয়ে দেবেন?
মহাবিশ্বের স্রষ্টা তার বান্দাদের কাছে উত্তম ঋণ চান! সুবহানাল্লাহ।আর আমি নাকি আমার পালনকর্তার এই প্রস্তাব-ই আজ পর্যন্ত শুনিনি।কতটাই না কপালপোড়া!
আল্লাহ্ সুবহানাওয়া তায়ালা আমাকে ব্যবসার প্রস্তাব দিচ্ছেন:
হে ঈমানদারগণ ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে রক্ষা করবে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে?তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনবে এবং তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে!(সূরা আস-সফ, ১০-১১)
আমি আল্লাহ্-এর পথেই বর্তমানে অবস্থান করছি। শান্তি পেলাম আয়াতটা শুনে।সূরা আন-আমের ১৬০ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ্ আয ওয়ায যাল বলতেছেন আমার প্রতিটি সৎকর্ম তিনি দশ গুণ বাড়িয়ে দিবেন।
"কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে।"
অন্যদিকে আমার গুণাহ যা করা হবে তার সসমপরিমাণ-ই শাস্তি দেওয়া হবে। সুবহানআল্লাহ ++
আরেকটি আয়াত শুনে আমি যেন আশার আলো পেলাম। চিল্লায় হালকা হালকা নিজের অতীত ভাবার পর খুব অনুতপ্ত হতাম। জীবনে এতো এতো পাপ করেছি। কিভাবে এগুলো মুছবো আর কিভাবেই বা আমার আমলনামা সওয়াবে পূর্ণ করবো? আর আমার আল্লাহ্ অন্তর থেকে সে দুশ্চিন্তাও মুছে দিলেন।
‘কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে আল্লাহ তাদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা ফুরকান: ৬৮-৭০)
আমির সাবের এ আলোচনায় সামনের জীবনকে নতুন ভঙ্গিতে সাজাতে শুরু করলাম। আস্তে আস্তে নামাযে প্রতি অনুরাগ জন্মে গেলো।নামায বাদ পড়লে ভাললাগতো না।দুই সপ্তাহ পর থেকেই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায এর সাথে সাথে ইশরাকের নামায, চাশতের নামায, সুন্নতে যায়দার নামায, আওয়াবিনের নামায, বেতরের ও নফল নামায পড়তে শুরু করলাম।বাদ ছিলো তাহাজ্জুদ এর নামায।এ নামায পড়ার মতো মানসিক শক্তি এখনো হয়ে উঠেনি।কিছু বন্ধু উঠতো, আমির সাবের সাথে তাহাজ্জুদ নামায পড়তো।আমি দু একদিন তাদের বিচরণের শব্দে জেগে উঠলেও আবার ঘুমিয়ে পড়তাম।
ফাজায়েলে আমাল থেকে তওবার নিয়ম, ফজিলত পড়তেছিলো একদিন তালিমে।বুঝলাম আমাকেও আমার পরওয়ারদিগারএর জন্য চোখের জল ফেলতে হবে।ইতিমধ্যে অধিকাংশ জামাতসাথী একাধিক বার তওবা করে ফেলছে।আমিই বাদ।আজকে কয়েকটি হাদিস শুনে সিদ্বান্ত নিয়ে ফেললাম তওবা করার।
নবীজী বলেছেন,‘দুটি চোখকে দোজখের আগুন স্পর্শ করবে না;প্রথম হলো সেই চোখ যা আল্লাহর ভয়ে কাঁদে।আর দ্বিতীয় হলো সেই চোখ;যা আল্লাহর পথে(জিহাদে)পাহারায় রাতযাপন করে।(তিরমিজি) আরেক হাদিসে বলেন ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ভয়ে কাঁদে; ওই ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা সেদিন তাঁর (আরশের) ছায়া দান করবেন; যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না।তন্মধ্যে ওই ব্যক্তি একজন, যে নির্জনে আল্লাহ্ তায়ালাকে স্মরণ করে; আর তার চোখ থেকে পানি ঝরে।(বুখারি ও মুসলিম)
হাদিসগুলো প্রতিবার-ই অন্তরে গিয়ে লাগে।কখনো কারো কথায় ভিতরে এতোটা লাগেনি।আল্লাহ্ এর পথে এসে প্রতিদিন বিগলিত হয়ে যাচ্ছি।নিজেই যেনো নিজের এক আমিকে আবিষ্কার করছি দিন দিন।
সে রাত্রে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে জীবনে সকল পাপ, অপরাধ, দোষত্রুটি স্মরণা,স্মৃতিচারণ করে জল ফেলার চেষ্টা করলাম। আল্লাহ্ কে ওয়াদা দিলাম।জল তো বের হচ্ছেই না।চোখের কোণে এক বিন্দু জল জমতে শুরু করলো।এক সময় দুচোখ বেয়ে দুফোটা জল বেয়ে পড়লো।এমন প্রশান্তি পেলাম যা আমাকে কখনো গান-বাজনা বা নেশায় দেয়নি।যতই স্রষ্টার কাছে পানাহ চাচ্ছিলাম নিজের পাপের জন্য ততই প্রশান্তি পাচ্ছিলাম।তখন হয়তো "বিধাতা আমায় দেখে দেখে হেসেছিলেন।" আমি ক্ষান্ত হয়নি দুফোটা জল ফেলে। আরো কাঁদতে হবে।হ্যাঁ, আরো কাঁদতে হবে।
"শিশু_হতে_উদয়_হস্তে"
কিছু দিন পড় আবার আমার গ্রুপের রান্না বাজারের দায়িত্ব পড়লো।বাজারে গেলাম।সব সময়ের মতো বাজারে কিছু হত দরিদ্র মানুষ থাকে।অনেকে বিচরণ করে বেড়ায় বাড়িতে কিছু খাবার নেওয়ার জন্য।বাজারে ডুকতেই এক চার বছরের মতো বয়সী একটি শিশুকে দেখতে পেলাম। রুক্ষ চুল, শুষ্ক মুখ।কাপড় ছেড়া, প্রায় অর্ধলগ্ন। দোকানে দোকানে ঘুরে ঘুরে খাবার চাচ্ছে।আমি আগের মতোই ওদিকে খেয়াল না করে নিচু মনমানসিকতা নিয়ে বাজার করতে লাগলাম। বাজার করা প্রায় মাঝামাঝি পথে।এমন সময় চাউলের দাম নিয়ে খুব কড়াকড়ি দামাদামি করতেছি।মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছিলো। ঠিক তখন শিশুটা আমার জিন্সের পেন্টের বাম পাশে টানটে ছিলো। আমার ব্রেন তখন কাজ করতেছিলো না,কারণ আমি দামাদামির ভিতর! শিশুটি আবার টান দেয়। শিশুটি যে পাশে টান দেয় আমি তার বিপরীত পাশে দ্রুত গতিতে দেহ ঘুরাই। পরে দেখি শিশুটি মাটিতে রাস্তার পাশে ইটের উপর পড়ে গেলো। শিশুটি খুব রোগা।এই দৃশ্য দেখে তাড়াতাড়ি শিশুটিকে উঠালার।কপালে হালকা চোট পেয়ে গেছে। ছেলেটা এমন আবেগ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়েছে যে আমি নিজেকে খুব অভাগা,আকাইম্মা মনে করতে লাগলাম। ছেলেটাকে ঔষুধের দোকানে নিয়ে গিয়ে একটা বেন্ডেজ লাগিয়ে দিলাম আর বললাম তোমার কি লাগবে।তার ভাবসাবেই বুঝলাম খুব ক্ষুদার্থ সে।কিন্তু ছেলেটা টাকা চাইলো।আমি তাকে পঞ্চাস টাকা দিলাম।কিন্তু মন ভরলে না।হোটেলে নিয়ে গিয়ে সিংগারা,পুড়ি খাওয়াইলাম।ছেলেটা খুব খুশি হলো।কেনো জানি না খুব শান্তি পাচ্ছিলাম ওকে তোষামোদ করে।তুমি কই থাকো?বলে দিলো কই থাক! জিজ্ঞাসা করলাম তোমার বাবা কি করে? ছেলেটা কিছু বললো না।শুধু বললো আব্বা ব্যাথা পাইছে, ব্যাথা পাইছে আব্বা।বাজার হোটেলে রেখে আমরা দুই বন্ধু ওর বাড়িতে গেলাম। মাত্র ৫-৭ মিনিট লাগলো যেতে। সেখানে ডুকতেই বুঝলাম এটি একটি কৃষকের বাড়ি।বাড়িতে গিয়ে ছেলেটা সোজা ওর বাবার কাছে গেলো।পকেট থেকে আমার দেওয়া ৫০ টাকা দিলো।বাবা খুব খুশি হলেন। তিনি বিছানায় শুয়ে ছিলেন।আমরা পরিচিত হলাম ওনার সাথে। ওনি পেশায় কৃষক। মাদকাসক্ত তিনি।জুয়ো খেলে টাকা ইনকাম করে মদ, গাজা কিনে সেবন করতেন।হঠাৎ একটিন জুয়োর আসরে মারামারি লেগে যায় তার সাথে।ডান পায়ে বিশাল আঘাত করে খেলার সঙ্গী।পুরো পিঠেও বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পেয়েছেন।
আজ প্রায় ৩ সপ্তাহ তিনি বিছানায় বসে আছেন। খাবার মতো ঘরে কিচ্ছু নেই। এগুলো বলতে বলতে তিনি কেঁদেই দিলেন প্রায়। পা ঠিক করার মতো টাকা নেই।এই ছোট্ট শিশু আর স্ত্রীকে নিয়ে কি করবেন।খাবার কেনার পয়সাও নেই।এগুলো শুনে আমি যে মাদকাসক্ত মাথায় ঘন্টা দিলো। ভিতরে একটা কথা লাফিয়ে উঠলো,আল্লাহ্ যদি আজকে আমাকে এর স্থানে পাঠাতেন;আল্লাহ্ যদি আমাকে এভাবে কোন দুর্ঘটনার শিকার করতেন। আমি আবার বাজারে গিয়ে একটা মুরগি ও কিছু সবজি কিনলাম তাদের জন্য।আমাদের কেনা চাউল থেকে তাকে কিছু দিলাম।মসজিদে ফিরলাম।আমার কাছে যা টাকা ছিলো সেখান থেকে ঐ ব্যক্তিটির জন্য বাজার করতে গিয়ে যা টাকা খরচ হয়েছে তা মিট করে দিলাম।একাজ করে এতো ভালোলাগা হয়েছে যে আমি পুরোটা দিন হাস্যউজ্জ্বল ছিলাম।বিধাতা ভালো কাজে প্রতিবার ই প্রশান্তি ঢেলে দেন।আমার বন্ধু আমাকে দেখে কোরআনে কয়েকটা আয়াতের কথা বললো।কি পুরষ্কার দেওয়া হবে দানশীলদের।কোরআনের কথা কখনো খারাপ লাগে না।বরং প্রতিবার অন্তরে ভয় জাগ্রত করে।
দুদিন পর,বিকেলে আমাদের নেশা করার শাস্তি নিয়ে অনেকগুলো হাদিস শুনানে হলো।আমি হাদিসগুলো শুনে তালিমের ভিতরই কেঁদে দেবো এমন অবস্থা।চোখ ছলছল করতেছে। আহা,আমি কত বড়ই না মহাপাপ করেছি বছরের পর বছর। তালিম শেষে বই নিয়ে সোজা সেই কৃষকের বাড়িতে চলে গেলাম।কিছুটা সুস্থ হয়েছেন তিনি এবং তার পা।তাকে শুনাতে লাগলাম হাদিসগুলো-
মদ পান হারাম,মদ পানকারীর আখিরাতে কোন অংশ নেই,মদ পানকারী পান করা অবস্থায় ঈমানদার থাকে না,মদ পান করা অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বে-ঈমান হয়ে পরকালের যাত্রা শুরু করবে,নবীজী মদ পানকারীকে বেত্রাঘাত এবং জুতা মেরেছেন,যা নেশা সৃষ্টি করে তাই আমার আমার উম্মতের সবার জন্য হারাম,বার বার বেত্রাঘাত করার পরেও চতুর্থবার কেউ মাতাল হলে তার গর্দান উড়িয়ে দাও,মদ পান সমস্ত পাপের উৎস,আল্লাহ্ এবং আখিরাতে বিশ্বাসী ব্যক্তি যেন মদ পান কেন;মদের টেবিলেও যেনো না বসে।নেশাকারীরা জাহান্নামীদের ঘাম অথবা জাহান্নামীদের থেকে নির্গত দুর্গন্ধযুক্ত নিকৃষ্ট রস পান করানো হবে,নেশাকারী ব্যক্তি জাহান্নামী মহিলাদের যৌণাঙ্গ থেকে বের হওয়া বিষাক্ত নিকৃষ্ট তরল পান করানো হবে,জাহান্নামে তাদের জন্য আছে কান্তহীন আগুণ, হাজার হাজার বছর সেখানে তারা দগ্ধ হবে, এমন সাপ,বিচ্ছু তাদের জন্য রয়েছে যা একবার দংশন করলে ৪০ বছর তার যন্ত্রণা হবে।
এসব শুনে আমি তালিমে যেভাবে কেঁদেছিলাম লোকটিও সেভাবে ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে দিলো।আমিও কেঁদে দিবো প্রায়।কৃষকের সাথে সেদিন একসাথে মাগরিবের নামায পড়েছি।ঈদের নামায ছাড়া কোন নামায পড়েনি সে।
যখন আমরা দুজনে একসাথে নামায পড়ছিলাম তখন হয়তো "বিধাতা আমায় দেখে দেখে হেসেছিলেন।" সত্যিই,আল্লাহ্-এর কালামে নবীজীর হাদিসে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম,কঠিন পাথুরে হৃদয় বিগলিত হয়ে যায়। এই হলো আমার আল্লাহ্।আর এই হলো আমার আল্লাহ্-এর হেদায়েত।
-অসমাপ্ত

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন