বুয়েটে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র প্রিজম। ফেসবুক, ইনসটাগ্রামে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার। দিনে ৫-৭ জায়গায় ছাত্র ছাত্রী পড়ায়। মাসে চৌদ্দ পনের লক্ষ টাকার মতো কামাই তার। বলতে গেলে টাকা-পয়সা-খ্যাতি নিয়ে তিলে তিলে আনন্দ ফূর্তি তার। কিন্তু ইনার ভক্তদের একটাই কষ্ট, আর তা হলো প্রিজম নাস্তিক। একেবারে ইউনিক হাইব্রিড নাস্তিক যাকে বলে! দুঃখের বিষয়, কোনো ভক্তই ইনাকে জাররা পরিমাণও পথে আনতে পারেনি।
প্রিজম নাস্তিক হয়েছে সেই হাই স্কুলে থাকতেই। দেশের নামীদামী জায়গায় বিতর্ক অনুষ্টানে বিভিন্ন বিষয়ে বিজয়ী হয়েছে সে। কারো সাথে তর্ক লাগলে একেবারে ধুয়ে মুছে দেয় তাকে। সৃষ্টিকর্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেই খুলে দেয় বিজ্ঞানের দুয়ার। বলে দেয় কি কেন কিভাবে এগুলো সৃষ্টি হয়েছে, সৃষ্টি হতে আদৌও কোনো স্রষ্টার দরকার আছে কিনা? জ্ঞানের স্বল্পতার জন্য কেউই ইনার সাথে পেরে উঠতে পারে না। আমি এই বেটাকে নিয়ে প্রায় তিন মাস ধরে গবেষনা করছি। পর্যাপ্ত তথ্য পেয়ে গেছি, আলহামদুলিল্লাহ্। সময় বুঝে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম বিতর্ক আলোচনার জন্য। তাকে গুলিস্তানের বিখ্যাত এক হোটেলে কফি আড্ডার দাওয়াত দিলাম।
তো দিনটি এসে গেলো। উফফ, আজকে খেলা জমবে! আর তর সইছে না। বিশাল আনন্দ ফূর্তি নিয়ে চারটা বাজার আধ ঘন্টা আগেই চলে গেলাম গন্তব্য স্থলে। আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ওনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য। প্রিজম দাদা ভালো সময়ানুবর্তীতা পালন করে। চারটা বাজার দশ মিনিট আগেই চলে এসেছেন। সাথে সাথে অর্ডার করলাম, কড়া দুধে কেপাচিনো কফি। কুশল বিনিময় করা শেষে আলোচনা শুরু হয়ে গেলো!
আমি: আপনি তো বিশাল সংখ্যাক মানুষকে একেবারে দমিয়ে দিয়েছেন নিজের যুক্তিবিদ্যা আর বিজ্ঞান দিয়ে! শুনেছি আপনার ভয়ংকর যুক্তিপারদর্শিতা আছে। তো আমি আজকে উল্টোভাবে আপনার কাছে অনুরোধ করছি যে, আমি আপনার যুক্তি শ্রোতা না হয়ে, উল্টো আপনি আমাকে প্রশ্ন করে আমার যুক্তি শ্রোতা হন।
প্রিজম: বাহ্, বেশ ভালো তো। আমি তো উল্টো কাল রাতে পদার্থবিজ্ঞানের বইগুলো রিভিশন দিয়ে আসছি তোমাকে আটকাবো বলে।
আমি: হা হা, প্রশ্ন করেন দেখি, প্রিজম দাদা। দেখি কিছু সমাধান দেওয়া যায় কিনা!
প্রিজম: শুনেছি কেউ আল্লাহর কোরআনকে পোড়ালে, কাবা শরীফকে ভেঙে ফললে যতটুকু কষ্ট পান তার থেকেও নাকি অনেক বেশি কষ্ট পান যখন কেই আল্লাহর কোনো বান্দার মন ভেংগে দেয়। সোজা কথায় কারো মন ভাঙা কাবা ঘর ভাঙার থেকেও বড় কষ্টের বিষয় আল্লাহর জন্য। তো, আমার প্রশ্ন হলো তাহলে সেই আল্লাহ কিভাবে তার বান্দাদের ভূমিকম্প, টর্নেডো, হারিকেন, সুনামি, টাইফুন, সাইক্লোন, দাবানল, বন্যা, খড়া দিয়ে এত্ত এত কষ্ট দেয়? যার ফলে কোটি কোটি মানুষ অকালে মারা যায়, কোটি কোটি মানুষ গৃহহীন হয়, আত্নীয়-স্বজন, ধন সম্পদ হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে যায়। এই হলো তোমার আল্লাহ? আশ্চর্য!
আমি: আচ্ছা, বলছি। বছরের পর বছর যুগের পর যুগ কোনো জায়গায় শান্তি বিরাজ করলে কিন্তু আমরা অধিকাংশ মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে কোনো ক্রেডিট দেই না। অন্যদিকে কোনো দুর্যোগ হলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা গলা ফাটিয়ে আল্লাহর নাম ধরে চিল্লাতে থাকে "ও আল্লা তুমি এগুলা কি করলা, আমার সব নিয়া গেলা!, আমারে নিশ্ব বানাইয়া দিলা" ইত্যাদি ইত্যাদি।
★যাগ্গে, মূল কথায় আসি। পাপী মানুষ পাপ করে, অন্যের ক্ষতি করে অন্যের জীবন ছারখার করে দিচ্ছে! এখানেও তো আল্লাহর দয়ালু হওয়ার কথা ছিলো, পাপী মানুষকে পাপের জন্য তো তখনি ধ্বংস করে দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এই জীবন একটা পরীক্ষা ক্ষেত্র। পাপী মানুষকে পাপ করার সাথে সাথে ধ্বংস করা হলে পৃথিবীতে কেউ পাপ কাজ করতোই না। পৃথিবীতে মানুষের ইচ্ছাস্বাধীন অনুযায়ী পাপ পুণ্য দ্বারা বেলেন্স করে রাখা হয়েছে। ভালো মানুষ আছে বলে খারাপ মানুষের বদনাম, খারাপ মানুষ আছে বলে ভালো মানুষের সুনাম। ভালো খারাপ একে অপরের পরিপূরক। ঠিক তেমনি প্রাকৃতিক অশান্তি ও প্রাকৃতিক শান্তি দিয়ে আল্লাহ প্রকৃতি ব্যালেন্স করে রেখেছে।
★প্রকৃতি শান্ত রেখে মানুষকে আল্লাহ বুঝাচ্ছেন শান্তি কতটা স্বস্তিকর কতটা বড় নিয়ামত, আর দুর্যোগ হলে সেটা কতটা অস্বস্তিকর, নিষ্ঠুর। খারাপ কিছু দিয়ে ভালো কিছুর গুরুত্ব বুঝানো হচ্ছে আর কি! প্রকৃতিতে শান্তি থাকলে কোনো দুর্যোগ না হলে আল্লাহর কথা মানুষ স্মরণই করতো না সেভাবে, কিন্তু যখন নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, তখন ঠিকি মানুষ দলে দলে আল্লাহকে ডাকতে শুরু করে। আল্লাহ যে সর্বশক্তিমান, সব কিছুর উপর তার কৃতিত্ব আছে তা অনেক সময় প্রকৃতির দুর্যোগগুলো দেখে সাধারণ মানুষের মাথা নাড়া দিয়ে উঠে । আল্লাহর পথে ফিরে আসার বোধ জাগ্রত করে। নূহ, লুত, হুদ, সালেহ,ইসা, মুসা প্রায় সকল নবীর আমলেই যখনই তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, তার পরবর্তী প্রজন্ম গুলোতে মানুষ ঈমানদীপ্ত ও আল্লাহ ভিরু ছিলো।
★তারপর আরেকটি বিষয় হলো। ভূমিকম্প হয় মাটির নিচের টেকটোনিক প্লেট পড়াচড়া করার কারণে, সুনামি হয় সমুদ্রের নিবে ভূপাত একটির উপর আরেকটি উঠে গেলে, খড়া হয় আকাশে প্রয়োজনীয় জলীয় বাষ্প একসাথে না জমে বৃষ্টি না পড়ার জন্য, দাবানল হয় সূর্যের প্রচন্ড তাপে ঘটনাক্রমে বনে আগুণ ধরে, বন্যা হয় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলে, টর্নেডো হয় বাতাসের উচ্চ-নিম্ন চাপের অসামনজস্যতার কারণে। এগুলো সবকিছু যে আল্লাহ হাতে কলমে ধরিয়ে ধরিয়ে সংঘটিত করেন এমনটি নয় কিন্তু। তো প্রশ্ন হলো প্রকৃতি যখন কোনো দুর্যোগ সংগঠিত করতে শুরু করে তখন আল্লাহ তা থামিয়ে দেন না কেনো? আমি যদি আপনাকে উল্টো প্রশ্ন করি! একটা সন্ত্রাসী গুলি করে মানুষ হত্যা করার সময় আল্লাহ তাকে বাধা দেন না কেনো? আপনি হয়তো উত্তর দিবেন, অপরাধী মানুষকে তো আল্লাহ পরকালে শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন, প্রকৃতির তো কোনো শাস্তির ব্যবস্থা নাই, প্রকৃতি প্রকৃতির নিয়মে চলে। ঠিক তখন আমি বলবো তাহলে সাপ-বিচ্ছু, মশা-মাছি, বাঘ-ভাল্লুক এগুলো সৃষ্টি করলেন কেনো?
[প্রিজম দাদা চুপ]
★হলফ করে বলতে পারি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ জীবনের কোনো না কোনো এক বার প্রাণীকুল দ্বারা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবছর মারা যায় এই প্রাণীদের আক্রমণে, আর সেটা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মরা মানুষের সামনে নিতান্তই তুচ্ছ। এখন কিন্তু আপনি আর প্রশ্ন করতে পারবেন না যে, আল্লাহ দয়ালু হলে প্রাণীগুলো সৃষ্টি করে মানুষদের কষ্ট দিলেন কেনো?
প্রাণীকূল আমাদের জন্য অবধারিত প্রয়োজনীয় বিষয়। খাদ্যজাল, খাদ্য শৃঙ্খল, বাস্তুতন্ত্র বজায়ে রাখতে প্রকৃতিতে প্রতিটা প্রাণী অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। এখন তো পুরো পৃথিবীতে হাজার হাজার বন্যপ্রাণী সংরক্ষন সংস্থাও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
★শেষ যুক্তিতে আসি! ধরুণ, আল্লাহ মানবজাতিকে জানিয়ে দিলেন, পৃথিবী প্রতিটি মানুষ ৮০ বছর বাঁচবে। মানুষ তখন কি করবে? তখন মানুষ প্লেনিং করবে, ৭৯ বছর ৬ মাস পর্যন্ত পৃথিবীতে যত ধরণের পাপ, অপরাধ আছে ইচ্ছেমতো করবো কারো কোনো তোয়াক্কা না করেই, আর শেষ ৬ মাসে তওবা ইস্তোগফার ও নামায কালাম পড়ে আরামচে পরকালে চলে যাবো। অস্থির না বিষয়টা? কিন্তু এটা কখনো হবার নয়। ঠিক তেমনি আল্লাহ যদি ঘোষণা দিয়ে দিতেন পৃথিবীতে কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হবে না তাহলে প্রকৃতিকে মানুষ এমন ভাবে দূষণ করতো, এমনভাবে গাছ নিধন করতো, এমনভাবে কল কারখানা, সাগর সমুদ্র নোংরা করতো যে পৃথিবী কয়েক যুগের ম্যধ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়তো। প্রকৃতিকে আমরা আজ এইভাবে দূষিত করছি বলেই, বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত ভবিষ্যৎবাণী করে সাবধান করছেন সামনে বিশাল বিশাল প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসতে চলেছে। কিন্তু তাও মানবজাতির টনক নড়ে না। আর আল্লাহ যদি কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ার ঘোষনা দিতেন তাহলে যে কি হতো সেটা বলাই বাহুল্য। পরিশেষে একটা আয়াত বলতে চাই, মক্কার মুমিনরা একটা কথা বলতো, আল্লাহ সুবহানাওয়া তায়ালা সে কথা পছন্দ করে কোরআন শরীফে উল্লেখ করেন।
যদি তাদের কোন কল্যাণ হয় তবে তারা (মুমিনরা) বলে, ‘এটা আল্লাহর কাছ থেকে’। আর যদি তাদের কোন অকল্যাণ হয় তবে তারা (মুমিনরা) বলে, ‘এটা আপনার (মানবজাতির) কাছ থেকে’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৭৮)
আল্লাহ যা করেন সব ভালোর জন্যই করেন। আপাতদৃষ্টিতে আমাদের কাছে কোনো কিছু খুব অকল্যাণকর দেখা গেলেও,ভবিষ্যৎ এ এর মধ্যে বিশাল কল্যাণ ও ইতিবাচকতা আছে অবশ্যই। আশা করি আমার উত্তরে সন্তুষ্ট হয়েছেন!
প্রিজম: হুম, ভালো বিশ্লেষণ ছিলো। তবে এখন আমি আরেকটা প্রশ্ন করবো যে প্রশ্নের আগা মাথার কোনো উত্তরই তুমি দিতে পারবে না।
আমি: হা হা, বলেন দেখি, প্রিজম দাদা!
প্রিজম: আল্লাহ কিছু কিছু মানুষকে প্রতিবন্ধী,বিকলাঙ্গ,হিজরা বানিয়ে পৃথিবীতে পাঠায় কেনো? এরা কি করছে? কাউকে ধনীর ঘরে আবার কাউকে গরিবের ঘরে জন্ম দেয় কেনো? প্রতিটি শিশুই তো তোমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী নিষ্পাপ হয়ে জন্মায়। তাহলে কোন পাপের শাস্তি তাদের দেওয়া হয়?
আমি: হা হা হা, যেহেতু আপনার কথা মতো আমি এই প্রশ্নের কোনো আগা মাথা খুজে পাবো না, সেহেতু কথায় কথায় আমার সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কালামের সাহায্য নেওয়া লাগবে, বুঝছি। সূরা মূলকের দুই নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেন, "আল্লাহ্ সৃষ্টি করেছেন জীবন ও মৃত্যু তোমাদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে কে উত্তম তা পরীক্ষা করার জন্য"
★তাহলে আল্লাহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে পরীক্ষা করার পর পরকালে স্থানান্তর করবেন। সবাইকে কি একই রকম ভাবে পরীক্ষা করা হবে? না মানে, সবাইকে ধনী বানালেন নয়তো সবাইকে গরীব বানালেন। সবাইকে স্বাস্থ্যবান বানালেন নয়তো সবাইকে রোগা বানালেন। এভাবে কি আল্লাহ একযোগে ধনী অথবা গরীব, স্বাস্থ্যবান কিংবা রোগা বানিয়ে পরীক্ষা করবেন নাকি একেক জনের জন্য একেক ধরণের পরীক্ষা করবেন?
★আপনি নিশ্চই জানেন পৃথিবীতে ৭৮০ কোটি মানুষ আছে বর্তমানে। বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো কারো সাথে কারোর পুরোটা মিল নেই। আঙ্গুলের ছাপ বলেন, চোখের আইরিস বলেন, কিংবা ঠোটের গঠন; এগুলো কারোর সাথে কারোই শতভাগ মিল পাননি আজ পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞানী। কোনো মানুষের সাথে কোনো মানুষের মনের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, পছন্দ, অপছন্দের মিলের কথা না হয় বাদ ই দিলাম।
★আর যে আল্লাহ কি না পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে আলাদা আলাদা করে সৃষ্টি করতে পারে সেই আল্লাহ কেনো অনন্তকালের পরকালের জন্য একেক জনকে একেক ভাবে পরীক্ষা করতে পারেন না!
★কোনো শিশু অটিস্টিক, প্রতিবন্ধী, বিকলাঙ্গ হয়ে জন্মগ্রহণ করলে সেটা হবে তার মা বাবার জন্য পরীক্ষা! আবার শিশুটির জন্যও পরীক্ষা! কিন্তু এই পরীক্ষার ফলাফলে বাবা মা সহ শিশুটিও বিশাল পুরস্কৃত হবে। কারণ যার পরীক্ষা যত কষ্টকর, যন্ত্রণাদায়ক তার পুরষ্কার তত বড়। যেমন আপনি SSC পরীক্ষায় পাস করলে আপনার তেমন কোনো খ্যাতি সন্মান হবে না, অন্যদিকে আপনি BCS পাস করলে পুরো এলাকা এমনকি পুরো বিভাগীয় পর্যায় পর্যন্ত খ্যাতি ও প্রশংসায় ভরে যাবে। আপনার জীবনে আর কোনো পরিশ্রম করতে হবে না। সরকারি চাকড়ি, ভালো বিয়ে, সন্মান মর্যাদা সব পাবেন। যেমন কষ্ট তেমন কেষ্ট। যত বড় পরীক্ষায় বিজয়ী হবেন তত বড় পুরষ্কার পাবেন।
★হাদিসে অনেক জায়গায় আসছে আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়পাত্র হলো তার নবী রাসূলগণ। কারণ তাঁরা সকলেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় পরীক্ষার সম্মুখিন হয়েছেন। আসলে আল্লাহ যাকে যত পরীক্ষায় ও কষ্টে ফেলেন তাকে তত ভালোবাসেন। দিনশেষে জান্নাতে সবচেয়ে বেশি পুরস্কার, আরাম-আয়েস, সন্মাম মর্যাদা পাবে এই নবী রসূলগণ।
বরং যার কষ্ট কম, আরামদায়ক জীবন তার জন্যই বিপদ।
★ধনীদের পরীক্ষা করা হয় সম্পদ দিয়ে, এই পরীক্ষায় অতি নগণ্য মানুষ যাকাত দিয়ে, হালাল পন্থায় উপার্জন করে সফল হতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় শতকরা ৯৮% মানুষ এ পরীক্ষায় ব্যার্থ হয়। কারণ শত শত কোটি টাকার হালাল অর্থে এক টাকা হারাম ঢুকলে পুরো অর্থই হারাম হয়ে যায়। আর আজকাল কার মানুষের হালাল হারামের একটু আকটু চিন্তাও করে না। কাউকে রূপ লাবণ্য দিয়ে পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু অধিকাংশ নারী এই পরীক্ষায় হেরে যায়। যে যত সুন্দরী সে তার সৌন্দর্য নিয়ে তত অহংকার করে। কাউকে ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি প্রায় সকল ক্ষমতাবান মানুষ তার ক্ষমতার অপব্যবহার জীবনে কোনো না কোনো একবার করছেই।
কিন্তু অন্য দিকে যে গরিব, জীবন কষ্টে ভরা। তার যাকাত বা হারাম উপার্যনের ভয় নেই। যে কুৎসিত তার অহংকার হওয়ার ভয় নেই। যার ক্ষমতা নেই তার দুর্নীতির ভয় নেই। সুতরাং যে যত সাধারণ ও নিচু পর্যায়ে আছে তার জন্য হয়তো দুনিয়া আরামদায়ক হবে না কিন্তু পরকালে সে আনন্দ উৎফুল্লভরা জীবন পাবে। প্রকৃতপক্ষে এদের পরীক্ষা পরকালের উপর বিবেচনা করে অনেকাংশেই সহজ। যাদের ইহকালে যত কষ্ট হবে তাদের জন্য পরকাল ততই সহজাতর হয়ে যাবে।
"আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।" (সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৫)
#জাগরণএক্সক্লুসিভ
[♦বাংলাদেশে প্রায় দুই তিন লক্ষ জইফ, জাল, বানোয়াট, কুসংস্কার মূলক হাদিস আছে। লিংক:
https://islamqabd.com/%E0%A6%AE%E0%A6%A8-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A6%BE/
♦মন ভাঙা কাবা ঘর ভাঙার সমান হাদিস,টি জইফ বললো একজন, ঘেটে দেখছি।
♦প্রতিবছর কত মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মারা যায় ও প্রাণীর আক্রমণে মারা যায় তার হিসাব বিশাল পার্থক্য।
♦আর এটা কখনো যুক্তি যুক্ত নয় যে ২৩ বছরে পাঠানো, সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধুর কাছে দেওয়া কিতাব পুড়ালো কারো মন ভাঙার সমান কষ্ট পাবে, কিংবা শত শত কোটি মানুষের তাওয়াব সন্মান ও সেই পবিত্র ঘরতে ভাঙা একজন মানুষের মন ভাঙার চেয়েও কষ্টজনক হবে আল্লাহর কাছে]
বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০
Home
Unlabelled
আল্লাহ্ দয়ালু হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে মানুষকে গণহত্যা করে কেনো?
আল্লাহ্ দয়ালু হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে মানুষকে গণহত্যা করে কেনো?
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন