বাহ্, রে! আপনার জন্য চকচকে ৭২ টা হুর আর আমার জন্যে দুনিয়ার পুরানো একখানা স্বামী! - RATIONAL WORDS!

Home Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুলাই, ২০২০

বাহ্, রে! আপনার জন্য চকচকে ৭২ টা হুর আর আমার জন্যে দুনিয়ার পুরানো একখানা স্বামী!

আমি: এই মেয়ে! এগুলা কি? তুমি পড়ো কিসে?
তৃণা: কলেজে পড়ি, দ্বিতীয় বর্ষে!

আমি: এখনি এইসব! তুমি নাস্তিক কেনো? এই বয়সে তোমার আবার কি বুঝ হইছে?
তৃণা: অনেক বুঝ হইছে। লম্বা দাড়িওয়ালা হুজুরদের বাটপাড়ি ধরে ফেলছি আমি। পুরুষদের ৭২ টা হুর দিবে! আর আমার জন্য কিছুই নেই? শুধুমাত্র দুনিয়ার ঐ পুরাতন স্বামী ছাড়া? বা... রে! পুরুষরা চার চাট্টা করে বিয়ে করতে পারবে তাহলে আমরা পারবো না কেনো? নবীজী ১৩ টা বউ দিয়ে কি করছে? ফুটবল টিম বানাইছে নাকি? নারীদের কেনো এতো বাধাপড়া? সারাদিন ঘরে বইসা থাকো! কোনো কাজ কাম করা যাবো না! বাহিরে গেলে কালা বর্কায় মুড়াইয়া বের হতে হবো কেনো? নারী পুরুষ সমঅধিকার চাই! এসব আবল তাবল জিনিস সৃষ্টিকর্তার বিধান কেমনে হয়?

[নাউজুবিল্লাহ্ মিন জালেক]



আমি: ভালোই পাগলামি পারো দেখা যায়! তাহলে প্রশ্ন হলো আমরা, আমাদের এই পৃথিবী, এই বিশাল মহাবিশ্ব কোথা থেকে আসছে এতোসব!
তৃণা: হুহ! আমি কিছু নাস্তিক ভাইয়াদের সাথে পরিচয় হইছি অনলাইনে। তারা আমাকে বিবর্তনবাদ (বানর থেকে মানুষে বিবর্তিত হওয়া), কোয়ান্টাম মেকানিক্স, কসমোলজি (Nothing থেকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি) শিখিয়ে দিবে! আসলে আপনারা বিভ্রান্তিতে আছেন! উন্নত বিশ্বে সবাই আস্তে আস্তে এগুলা ধর্মের কাণ্ডকারখানা বুঝে উঠতেছে। বেহুদা ধর্মান্ধ মানুষের সংখ্যা কমছে! সভ্য মানুষের সংখ্যা বাড়ছে! আমার কষ্ট হয় কবে আমাদের সমাজ এসব বুঝতে পারবে!

আমি: আসলে তুমি বড্ড বেশি বুঝে ফেলছো!
তৃণা: আমি ঠিকই আছি! আপনি মাথামোটা! হুহ!

আমি: তোমাকে সব খুলে বলার আগে শেষ আরেকটা প্রশ্ন করি! তুমি কি আদৌও কোরআনের এক পারার তর্জমা পড়ছো বা নবীজীর সিরাত পড়ছো?
তৃণা: ওগুলা পড়ে কি হবে! হুদা হুদি মোটিভেশন দেওয়া খালি! আর কি আছে?

আমি: আমি ভাষা হারিয়ে ফেলছি! আসলে, কি বলবো তোমাকে!
তৃণা: এতো পক পক করেন কেনো? কাজের কথা থাকলে কন!

আমি: প্রথমে হুরের কথাই বলি। ইদানীং ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক, বিধর্মীরা খুব মেতে উঠছে এটা নিয়ে।
তৃণা: করবেই তো! ৭২ টা কুমারী হুর দিয়া কি করবে জান্নাতের জুব্বাওয়ালারা?

[আসতাগফিরুল্লাহ্]

আমি: আহা বলতে দাও, বালিকা! পবিত্র কোরআনে চারটি জায়গায় হুর শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে(১) হুর শব্দটি বহুবচন। হাওরা শব্দের বহুবচন হলো হুর। বহুবচন মানে একের অধিক! যেমন: শিক্ষার্থীরা, মানুষগুলো, গরুর পাল, ভেড়ার পাল-এগুলো সব একের অধিক কোনকিছুকে বুঝায়। হুর শব্দের অর্থ প্রকৃতপক্ষে সঙ্গী, যা নর-নারী উভয়ের জন্য ব্যবহার করা যায়।(২) কোরআন শরীফে পুরুষদের নারীবাচক হুরের বর্ণনা দিয়ে মূলত তাদের জিহাদ, দ্বীনের জন্য কুরবানি, দানশীলতা এবং ইসলামের দাওয়াতের কাজ প্রসার করার জন্য অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়েছে।

❑ আচ্ছা, আরও বিশ্বাসযোগ্য করতেছি। যাদের স্বামী জাহান্নামী হবে তারা জান্নাতে কি একা থাকবে? কখনো না! তারা নিজেদের পছন্দ মতো জান্নাতী পুরুষ হুর পছন্দ করে নিবে। যেমন ইসলামের প্রথম শহীদ ফেরাউন এর বিবি আছিয়া। ফেরাউন অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। তাহলে ওদিকে কি ইসলামের প্রথম শহীদ নারী জান্নাতে একাকী থাকবে? মোটেও না! তিনি অবশ্যই তাঁর পছন্দ মতো জান্নাতী সঙ্গীদের বাচাই করেই মহাআনন্দেই থাকবে। অন্যদিকে কোন মুমিন পরহেজগার নারী যে বিবাহের আগেই মারা গেছে সে কি জান্নাতে একাকী থাকবে?(৩) কখনোই না! জান্নাতে গিয়েও যদি কোন মানুষ একাকী থাকে! তাহলে সেটা হবে চরম মাপের অপূর্ণতা, একাকীত্বের ব্যাপার। আর আল্লাহর জান্নাত সকল ধরণের অতৃপ্তি থেকে পবিত্র।

❑ হ্যাঁ, তুমি যদি ৭২ টা হুর চেয়ে বসে পড়ো, তাহলে আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাকে দিবেন। কারণ আল্লাহ্ কোরআন শরীফে বলেছেন, সেখানে তারা যা চাইবে তাই পাবে। কিন্তু ৭২ টা হুর পাওয়ার পর তুমিই হয়তো একমাত্র জান্নাতী নারী হবে যার ৭২ টা পুরুষ সঙ্গী থাকবে। তুমি একজন মেয়ে হয়ে তোমার উপর ৭২ টা সঙ্গী উল্টাপাল্টা করলে কতটুকু সোভা পাবে না নিজেই বুঝে নাও। আমার সাথে এক লোকের দেখা হইছিলো, যে কিনা শুঁটকি মাছ বিশাল পছন্দ করতো, চ্যাপা শুটকি। আমাকে জিজ্ঞেস করতো, "ভাই, জান্নাতে গিয়ে আমি প্রথমেই শুঁটকি মাছের তরকারি চাবো, আমাকে কি দেওয়া হবে?" আমি হেসে উত্তর দিছিলাম, এই দুনিয়াতে আপনার যেমন মনমানসিকতা আর চাহিদা জান্নাতেও কি এরকম থাকবে নাকি? জান্নাতে আমাদের মন থেকে সকল ধরণের হিংসা, প্রতিহিংসা, বিদ্বেষ, প্রখরতা, নিষ্ঠুরতা দূরে করেই পাঠানো হবে। আপনি দুনিয়াতে কোকেন, হিরোইন, ফেঞ্চিডিল, ইয়াবা গাজা পছন্দ করলে, তওবা করে জান্নাতে যাওয়ার পরও কি জান্নাতে গিয়ে এগুলা চাইবেন? বরং সকল চাওয়াই হবে তখন গঠনমূলক। দুনিয়াতে মারামারি, ঘুষাঘুষি পছন্দ করলে জান্নাতেও কি তাই পছন্দ করবেন। বরং জান্নাতে আপনাকে সকল কিছু থেকে পবিত্র, পরিশুদ্ধ, বিশুদ্ধ করে পাঠানো হবে। আপনার প্রতিটি পছন্দ ভালোলাগার হিকমত থাকবে। সেখানে সবাই সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখবে। কারো কোনো ধরণের অতৃপ্তি, অহংকার থাকবে না। কষ্ট হবে না অন্যের নিয়ামত বা আনন্দ বিলাশিতা দেখে। তৃণা, তুমি জান্নাতে গেলে ৭২ টা সঙ্গী পাওয়া অমূলক আকাঙ্ক্ষা থেকে পবিত্র হয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। কাজেই "ফিরে আসো নিড়ে।"

❑ আর আসলে কি জানো, সহিহ্ হাদিসে কোথাও কোনো জায়গায় সাধারণ মুসলিমকে ৭২ টা হুর দেওয়ার কথা বলা হয়নি। একটি হুর ও আর দুনিয়ার স্ত্রীর কথা সহিহ্ বিশুদ্ধ হাদিসে বলা হয়েছে। সহিহ্ হাদিসে শুধু শহীদদের ৭২ টা হুর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।অন্যান্য সকল হাদিসের বিশুদ্ধতা অনেক দুর্বল।(৪)

❑ তোমারা মেয়েরা পিচ্চি পিচ্চি কিউট কিউট বাবুকে দেখলে লাফালাফি শুরু করে দাও! আনন্দে আত্নহারা হয়ে যাও কোলে নেওয়ার জন্য! যেনো একটা পিচ্চি বাবু পাইলে পৃথিবীতে আর কিছু লাগে না।কত্ত মেয়ে মুক্তা পছন্দ করে। এসব গিফ্ট পেলে নাকি মেয়েরা সবচেয়ে বেশি খুশি হয় এক জায়গায় পড়ছিলাম। তো আল্লাহ এই দুটোকে এক পেকেজে ধারণ করে জান্নাতের গেলামানদের ভিতর সপে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন "আর তাদের উপর প্রদক্ষিণ করবে চির কিশোরগণ, যখন আপনি তাদেরকে দেখবেন তখন মনে করবেন তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা" (সূরা ইনসান, আয়াত ৭৬)।ঐ সুদর্শন চিরকিশোরী গুলোর কাজ কি হবে জানো? তোমার জন্য সারাদিন পানপাত্র, সুরা, পানীয় নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবে। আর তুমি কিসের কি ৭২ টা হুর নিয়ে প্রতিহিংসায় পড়ে আছো! আরে তোমাকে তো হুরদের সর্দার বানাবে। তুমি হুরের থেকেও ৭০ গুণ বেশি সুন্দরী হবা! দুনিয়াতে এত কষ্ট করে নামায রোজা দানখয়রাত করছো। তোমার সাথে হুরের তুলনা বৈ কি? পৃথিবীর মেয়েরা সারাদিন সাজুগুজু মেকাপ করে। জান্নাতে আল্লাহ্ সেটাও পূরণ করে দিবে হুরের সর্দারনী বানিয়ে! জান্নাতে কারো কোনো বাসনা আকাঙ্ক্ষাই অপূর্ণ থাকবে না। এই দুনিয়ার চাইতেও হাজারগুণ বড় জগৎ দিবে তোমায়, তুমি তোমার রাজ্য বিচরণ করে ঘুরে বেড়াবা নাকি ৭২ টা হুর নিয়া টেনশন করবা? আল্লাহ্ সবকিছু হিকমত দ্বারা সাজিয়ে গুছিয়ে সৃষ্টি করেন। কিন্তু ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের মানুষ কেমন জানো? তাদের মাথায় একটা জিনিস বুঝে না আসলে, ঠিকমতো ওয়াকিবহাল না হলে সেটাকে অবিশ্বাস করে বা ফালতু মনে করে। আর যেমন তুমি না জেনে, না বুঝে নিজে নিজেই নাস্তিক হয়ে গেছো। কিছু মানুষ নিজেকে অনেক স্মার্ট, জ্ঞানী ভাবে। মনে করে আমি যতটুকু বুঝি ততটুকুতেই জানি এই দুনিয়া সীমাবদ্ধ। স্টিফেন হকিংস এর নাম শুনছো নিশ্চই, তিনি নাকি সৃষ্টিকর্তার মন বুঝতে চেষ্টা করছে। মন বুঝতে না পেরে নিজেই নিজেকে পরে নাস্তিক বানাইছে। হা হা হা!

তৃণা: বুঝলাম ভাইয়া। আমি আসলে এতসব বিষয় জানতাম না!

আমি: কোরআনের প্রথম শব্দ হলো পড়। আজকে কিছু পড় নাই বলেই তো এই দশা। বাদ দাও, চারটা বিবাহের বিষয়ে আসি:

❑ খবরের কাগজে কয়দিন পড়ছো যে, একটা মহিলা কোনো এক পুরুষকে ধর্ষণ করছে? আদৌও কি খবরে এমন কিছু শুনতে পাইছো? পুরো জীবনে হয়তো দু একবার শুনছো, সেগুলা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিচ্ছিন্ন-ব্যতিক্রম ঘটনা কখনো উদাহরণ হতে পারে না। ঐসব মেয়েরা যৌনবিকারগ্রস্থ ছিলো বিদায় এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

❑ অন্যদিকে নারী ধর্ষণের কথা প্রতিদিনই শোনো যায়। ২০১৯-এ পুরো বাংলাদেশে ৫ হাজার ৪০০ জন নারী, শিশু ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। মানে ৩৬৫ দিনে ৫৪০০ জন। মানে দিনে ১২-১৪ জন। প্রতিদিনি দেশের এক বা একাধিক জায়গায় অগণিত মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে! পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে নারী ধর্ষণ হয় না। তো এখানেই বুঝা যায় পুরুষদের যৌন বাসনা কামনা নারীদের থেকে অনেক অনেক বেশি। পুরুষদের এসব মানসিকতার জন্যই আল্লাহ্ দুনিয়াতে তাদের চারটি বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন। যেনো তারা সকল ধরণের অনৈতিক সম্পর্ক থেকে দূরে থাকে।

❑ ইতিহাস সাক্ষী; পুরো মানব ইতিহাস জুড়ে পৃথিবীর প্রতিটি সভ্যতায় বহুবিবাহ প্রচলিত ছিলো। গ্রীক সভ্যতা, ব্যাবিলন সভ্যতা, সিন্ধু সভ্যতা, মেশোপিটিয়া সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা, মায়া সভ্যতা; কোনো একটা সভ্যতাও বাদ নেই। কিন্তু নারীর বহু বিবাহ খুজতে গেলে টর্চ লাইট নিয়ে ইতিহাস খুঁজাখুঁজি, ঘাটাঘাটি করতে হবে। হা হা হা!

❑ তুমি কি আজ পর্যন্ত কোথাও কোন জায়গায় একটা মহিলাকে চারটা বিয়ে করার কথা শুনছো? একসাথে চার জন পুরুষের সাথে ঘর করতেছে একজন মহিলা? তুমি কি সত্যিই খুশি হবে যদি তোমার আম্মু আজকে আরো তিনটা বিয়ে করে? বলো? তাহলে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তুমি নারী পুরুষের চারটি বিয়ে নিয়ে সমঅধিকার চাচ্ছ? আদৌও মাথা খাটিয়ে কথা বলো? নাকি সব আবেগ থেকে আসে, নাকি বিবেগ?

তৃণা: [চুপ]
আমি: আরো শুনো, সমাজে দুই একটা মানুষ যেমন চোর, ডাকাত থাকে তেমনি তোমার মতো কিছু মানসিক বিকলাঙ্গ মেয়ে নারীদের চারটি বিয়ে নিয়ে বেহুদা আন্দোলন করে। এই যে তাসলিমা নাসরিন একটা, বেশি বিবাহ করতে গিয়ে এখন তার কোনো স্বামীই নেই, সব ছেড়ে চলে গেছে। আবারও বলি, ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ হতে পারে না, তোমরা হলে মানসিকভাবে ব্যতিক্রম মানুষ। তোমাদের আন্দোলনে সমাজের কোন পরিবর্তন হবে না, উল্টো সমাজই তোমাদের তিরস্কার করবে।

❑ ওহ হ্যাঁ, নবীজীতে ১৩ টা বউ নিয়ে গালি দিলে। বুঝা গেলো মাথা একেবারে গেছে। ইসলাম বিদ্বেষী হয়ে গেছো। শুনো নবীজীর ১৩ টা বিবাহের ঘটনা। মূলত ১১ টা বিবি আর ২ টা দাসী ছিলো। বিষ্ময়কর ব্যাপার হলো নবিজীর ৯ টি স্ত্রী বিধবা ছিলো। তাদের ভালোর জন্য, তাদের বাসস্থান ও চাহিদা পূরণের জন্য তিনি ঐসব বিধবা নারীদের বিবাহ করেন। আর খাদিজা বিবি বাদে সবগুলো বিবাহ হয় ৫০ উর্ধ বয়সে হয়।(৭)

❑ প্রথম বিবাহ বিবি খাদিজার সাথে! ২৫ বছর বয়সের তাগড়া যুবক ৪০ বছর বয়সী নারীকে বিবাহ করছে যে নারীর কিনা এর আগে আরও দুইবার বিবাহ হয়ে গেছে। পাবে কি বাংলাদেশে কোন ছেলেকে যে তার থেকে ১৫ বছর বেশি বড় কোনো মেয়েকে বিয়ে করবে? জীবনেও না! নবীজী ৪০ বছর বয়সী এই পৌরা নারীর সাথে ২৫ বছর সংসার করেছে আর তার মতো পবিত্র মানুষের নামে তোমরা এই সব বলো? ধিক্কার জানাই এসব কুলাঙ্গারদের!

❑ ৫০ বছর বয়স, যখন বার্ধক্য ছুই ছুই তখন মক্কার সবচেয়ে জ্ঞানী গুণী মানুষ আবু বকরের সন্তানের সাথে বিয়ে হয় নবীজীর। এর কারণ ছিলো বিবি আয়েশাকে দ্বীনের জ্ঞান বু্দ্ধি হিকমত ছোটবেলা থেকেই নবীজীর কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়া যাতে নবীজী ইন্তেকালের পরও বহুদিন তিনি মানুষদের মাঝে বিভিন্ন সমস্যার বিধিবিধান নবীজীর আদর্শ অনুযায়ী দিতে পারে। সাহাবীরা বলতেন, এমন কখনো হয়নি যে আমরা বিবি আয়েশার কাছে গেছি কিন্তু তিনি আমাদের উক্ত সমাধান দেন নি। তাহলে বুঝতে পারছো কতটা হিকমতসম্পূর্ণ ছিলো বিবি আয়েশার সাথে বিবাহটি। এছাড়াও আয়শা অনেক মেধাবী ও প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন।

❑ আমার নবীজী প্রচুর লাজুক ছিলেন। কুমারী নারীর থেকেও বেশি। মহিলারা বার বার নবীজীর কাছে আসতো বিভিন্ন ধরণের মাশালা, মাসায়েল, বিধিনিষেধ জানার জন্য। নবীজী লজ্জিত হতেন। তাই আল্লাহ তার স্ত্রীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেন যাতে স্ত্রীগণ নবীজীর কাছ থেকে শিখে নারীদের মাঝে প্রচার করে দিতে পারে। বিভিন্ন যুদ্ধের পর নবীজী মুশরিকদের স্ত্রীদের বিয়ে করে তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। শত্রুদের মেয়েকে বিয়ে করে বিয়াইন সাব হয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী করেন। বিচক্ষণ ও সুকৌশলীর এক অনন্য দৃষ্টান্ত আমাদের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠা নবী মুহাম্মদ (সাঃ)। এসব তোমাদের মতো সীমাবদ্ধ মস্তিষ্কের মাথায় যে কবে ডুকব! হায় আল্লাহ্!

❑ নারী পুরুষের সমঅধিকার সম্পর্কে কি বলবো! আচ্ছা বলোতো নারী পুরুষ কি এক জিনিস যে তোমরা সমাজে পুরুষদের মতো সমঅধিকার চাচ্ছো? তুমি যদি চাকড়ি করতে যাও তোমার সন্তানেরা কি আদৌও তোমার যত্ন স্নেহে বড় হবে? যেটা কিনা মায়ের উপর সন্তানের সবথেকে বড় অধিকার!

❑ এটা এখন একেবারে ব্যক্তিস্বাধীনতা পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি, যেসব নারীরা বাহিরে এসে বেপর্দা হয়ে চাকড়ি করে তাদের কেউ ই মানসিক শান্তির অধিকারী নন। নারীদের নাই পুরুষদের মতো শারীরিক শক্তি, নাই পুরুষদের মতো মেচিউরিটি, তোমাদের তৈরী করা হয়েছে পাজরের হাড় থেকে যার সৃষ্টি উদ্দেশ্যই ছিলো আলাদা আলাদা। দেশে আজকে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নৈরাজ্য সৃষ্টি হয় নারীদের চোগলখোরি, কোটনামির জন্য যেগুলো হতো না যদি তোমরা বাহিরে বের হয়ে নিজেদের পুরুষদের মতো স্বাধীন ভাবতে। এটা নিয়ে বলতে চাই না কারণ আমাদের সমাজ পরিবর্তন হয়ে গেছে সাথে সাথে বেড়ে গেছে নারীদের প্রতি ধর্ষণ, নির্যাতন ও ইভটিজিং। আমাদের দেশে প্রতিটি ঘরে ঘরে মেয়েরা এখম স্বপ্ন দেখে বড় বড় জায়গাতে যাওয়ার। সমাজ চেঞ্জ হয়ে গেছে। এসব নিয়ে যুক্তি বা প্রতিবাদ করার দিন শেষ। সভ্য সমাজে সভ্য হচ্ছে মানুষ, কিন্তু নিচে নিচে আসলে আমরা তার থেকে বেশি অসভ্য হচ্ছি। আধুনিক সভ্যতার নামে নষ্টামি ছাড়া এগুলা কিচ্ছু না।

তৃণা: আমি নিজেও কাজের মহিলার কাছে বড় হইছি। ইট পাথরে গড়া চার দেয়াদের ভিতর বেড়ে উঠছি। আসলে নারীদের গৃহ কাজের জন্যই বানানো। শিশুর যত্ন নিবে, নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াবে, আদর্শ শিক্ষা দিবে। আমি নিজেও ইভটিজিং এর স্বীকার হইছি অনেক বার। যেদিন শখ করে বর্কা পড়তাম সেদিন কোন ছেলেও তাকাতো না। ইসলামের নিয়ম নীতিগুলো আমি সব গুলিয়ে খাইছি, নাস্তিকদের কয়েকটা ভিডিও দেখেই।

আমি: যাক, কিছুটা বুঝতে পারছো তাহলে। তুমি যে বিবর্তনবাদ সহ আরো কয়েকটা থিউরির নাম বললে, আসলে এসব তত্ত্ব, গোঁজামিল করে বানানো ছাড়া কিছুই না।

❑ বিবর্তনবাদ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে হাস্যরসাত্তক জিনিস। তারা ভুঁড়ি ভুঁড়ি বই লিখে ফেলছে এসব বিষয় নিয়ে, ডাইনোসর থেকে মুরগি বিবর্তিত হয়ে আসছে,(৮) তিমির মতো এক মাছ থেকে গরু বিবর্তত হয়ে আসছে, (৯) এক কোষী একটা জীব থেকে পুরো পৃথিবী কোটি কোটি প্রজাতির প্রাণী দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে।(১০) ইদুরের মতো স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে বানর আবার সেই লেজ ছাড়া বানর থেকে মানুষ!(১১) হা হা হা হা। আর কথার কথা হলো তোমাকে আমি যদি বানরের বংশধর বলি তুমি গর্ববোধ করবা নাকি বনী আদমের বংশধর বলি তাহলে গর্ববোধ করবা? এখন নিজেই বুঝে নাও, কোনটা তোমার জন্য সন্মান জনক।

❑ কোয়াট্রাম মেকানিক্স এর মূল কথা যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ে, শিক্ষার্থীদের গুলিয়ে খায়িয়ে দেওয়া হয়, সেটা হলো "কোয়াট্রাম জগৎ এ কারণ ছাড়াই যেকোনো কিছু হতে পারে" (১২) এটা নিয়ে ট্রল, মিমি কতকিছুই না ছাত্ররা বানায়। তবুও এটা নিয়ে নাস্তিক বিজ্ঞানীদের আশা, উচ্চাকাঙ্ক্ষার শেষ নেই। তারা তো এখন পর্যন্ত জানেই না বিগ ব্যাং এর জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুটুকু কই থেকে এসেছে, এটাতে মহাবিষ্ফোরণ এতো নিখুঁতভাবে কে ঘটালো? আর কেনোই বা আমাদের মহাবিশ্ব এমন দেখা যায়? আসলে বিজ্ঞানমহল জানেই না তারা কি জানে না! সব অনুকল্প/কল্পনা দিয়ে ভরা। সর্বশেষে ইসলামের বিজয় অবিসম্ভাবী। যে গতিতে মানুষ ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে আর ৫০+ টা মুসলিম রাষ্ট্রের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সে অনুযায়ী অচিরেই মুসলিমরা খ্রিষ্টানদের টেক্কা দিবে। আমেরিকার পিউ রিসার্চ সেন্টার ও পৃথিবীর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, বিশ্বতত্ত্ববিদ এর মতে ২০৭০ সালের মধ্যে আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হবো, ইনসাআল্লাহ। (১৩)

তৃণা: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ (সাঃ)



#জাগরণএক্সক্লুসিভ # তথ্য গুলোর রেফারেন্স :
(১) দেখুন: দুখান-৫৪, তুর-২০, রহমান-৭২, ওয়াকিয়া-২২
(২) দেখুন: বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী মুসলিম স্কলার মোহাম্মদ আসাদের কোরআনের অনুবাদ "THE MESSAGE OF THE QURAN" এবং আবদুল্লাহ ইউসুফ আলির কোরআনের অনুবাদ যিনি একজন স্কলার ও ব্যারিস্টার ছিলেন। তাঁর লিখা অনেকগুলো বিখ্যাত ইসলামিক বই আছে। হুর সম্পর্কে আমার বক্তব্য গ্রহণযোগ্যতা না পেলে সয়ং জাকির নায়েক এর কথা শুনুন: https://youtu.be/M5HqviOi_wk
(৩) দেখুন: মাজমাউল ফতোয়া ১৫/৩
(৪) দেখুন: তিরমিযী-১৬৬৩, ইবন মাজাহ-২৭৯৯, আলবানী সহীহ আত-তিরমিযীতে তা সহীহ বলেছেন।
(৫) দেখুন: শুআবুল ঈমান,হাদীস-৫১২, মাজমাউয যাওয়ায়েদ,হাদীস-১৬৭৪৬
(৬) দেখুন: আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, তিরমিজি-২৫৬২, মিশকাত-৫৬৪৮, জামি' সাগীর-২৬৬
(৭) উইকিপিডিয়াতে সার্চ দিন "মুহাম্মদের স্ত্রীগণ" বিবিদের নাম, দাসীদের নাম, বিবাহের তারিখ, বংশ গোত্র সব তথ্য পেয়ে যাবেন।
(৮) দেখুন: [ https://www.google.com/amp/s/futurism.com/scientists-grown-dinosaur-legs-chicken-first-time/amp ]
(৯) দেখুন: [ https://scienceisbeauty.tumblr.com/post/54197571252/elomeryx-top-was-a-land-animal-related-to ]
(১০) দেখুন: [ https://graphicriver.net/item/human-evolution-infographics/21845626?utm_source=sharefb ]
(১১) দেখুন: [ https://www.google.com/amp/s/amp.theatlantic.com/amp/article/318565/ ]
(১২) দেখুন: [ https://youtu.be/C3J-MvKQLfE ]
(১৩) দেখুন: [ https://youtu.be/OqE10mPbCfA ]

[বি: দ্র:লিখাটি মেয়েদের হেয় করার কোনো রকম উদ্দেশ্যে লিখা হয়নি, লিখা হয়েছে বিধাতার বিধিবিধানের হিকমত জানানোর জন্য]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন