- RATIONAL WORDS!

Home Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪


মাদার তেরেসা, টমাস আলভা এডিসন এরা কি জান্নাতে যাবে না?

প্রতি বারের মতোই শুক্রবার সন্ধ্যায় স্যারের বাসায় পড়তে গেলাম, কুশল বিনিময় শেষে স্যার আমাদের দুটো অঙ্ক করতে দিয়ে খবরের কাগজে চোখ দিলো। পড়ছেন, জন্মবার্ষিকী হিসেবে টমাস আলভা এডিসনের কৃতিত্বের কথা, যিনি পৃথিবী আলোকিত করেছে তার বাল্ব দিয়ে। কিন্তু এর মাঝে একটি প্রশ্নে ওনার দর্শনতত্ত্ব ছেয়ে গেলো আমাদের মাঝে।

স্যার: কি বলবো, স্রষ্টা বড়ই স্বার্থপর। শুধু মুসলিমদের দেখে। এই যে দেখো টমাস আলভা এডিসন, তোমরা যে এখন রাতে রুমে এসে আমার বিদ্যানিকেতনে পড়তে পারছো, তার সবচেয়ে বড় অবদান এই টমাস সাহেবের। ইনার দিন রাত সাধনায় রোপন করা বৃক্ষের ফল আজ পুরো মানবজাতি খাচ্ছে।  আজ পুরো পৃথিবী আলোকিত, রাতে আর কেরোসিনের আলোয় অভাবে স্বপ্ন নিভে যাচ্ছে না। যাকে প্রতিটি মানুষ নাম শুনলে সন্মান করবে, ভক্তি করবে, যার খ্যাতি পৃথিবীর কানায় কানায়, ক্ষুদে কিশোরও যাকে আইডল বানায়, বিজ্ঞান মহল যাকে অতুলনীয় সম্মান সম্মাননা ভরপুর নোবেল দিয়েছে, তার প্রতিও আল্লাহ কিয়ামতের স্টেডিয়ামে ভ্রুক্ষেপ করবে না শুধু মাত্র অমুসলিম বলে। হায়, আফসোস!

এই ব্যক্তির কাছে পুরো মানবজাতি চিরকৃতঞ্জ, মুসলিম কি হিন্দু কি খ্রিষ্টান! শুধু মাত্র খ্রিষ্টান হয়েছে বলে, ইসলামের প্রতি ইমান আনেনি বলে আল্লাহ ইনার সব পরিশ্রম আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে দিবে। মাদার তেরেসা যিনি নিজের পুরষ্কার বিক্রি করে মানবজাতির পেটের ক্ষুদা নিবারণ করেছেন তাকেও জাহান্নামে ছুড়ে ফেলতে আল্লাহ দ্বীধাবোধ করবেন না। নেলশন মেন্ডেলা কি স্টিফেন হকিংস। সবই আল্লাহর কাছে কাফের, মূর্খ্য, নির্বোধ ছাড়া কিচ্ছু না। আফসোস, এটাই হলো আল্লাহ! জানিনা কিভাবে তোমরা ইমান ধরে রাখো, এসব বুঝার পরেও! 

আমি: লাব্বাইক, লাব্বাইক।

স্যার: মানে? 

আমি: না মানে, লাব্বাইক অর্থ আমি আছি; এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে! 

স্যার: হা হা, কি বলতে চাও তুমি?

আমি: এটা তো খুব সাধারণ বিষয়। আচ্ছা, একটু কল্পনা করুন আপনি একজন মনিব, আপনার একটি গোলাম আছে। তো আপনার গোলাম পুরো এলাকা জুরে প্রশংসায় পঞ্চমুখ,সাধুবাদে মুখরিত সকল মানুষ। কিন্তু আপনি নিজে যখন গোলামকে কাজ করতে দেন তখন সে তা করতে অনিহা প্রকাশ করে, কাজ করে দেয় না ঠিকমতো। আপনি কি মানুষের প্রশংসা শুনে সন্তুষ্ট হবেন নাকি গোলামকে নিজের কাজে লাগাতে পারলে তার উপর সন্তুষ্ট হবেন?

স্যার: আমার তো মানুষের প্রশংসার দরকার নেই, আমার গোলামের বেনিফিট দরকার। মানুষের প্রসংশা ধুয়ে ধুয়ে পানি খাবো নাকি যে সন্তুষ্ট হবো? 

আমি: ইকজেকলি, মানুষকেও তেমন সবার আগে আল্লাহকে বিশ্বাস করে তার সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। তাহলেই সে জান্নাতে যাওয়ার মূল সনদপত্র পাবে। দুনিয়ার মানুষের প্রশংসা এখানে কোনো কাজে আসবে না।

স্যার: যাহ বাবা, কোথায় পুরো মানবজাতি পাল্টে দেওয়া মনীষীরা আর কোথায় সাধারণ মণিব গোলাম।

আমি: আচ্ছা, আরও বড় করে উদাহরণ দিতে হবে বুঝছি।আমি যদি আমার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাই আর ওদিকে যদি পুরো মানবজাতির ত্রাণকর্তা হয়ে উঠি তাহলেও কি একজন সাধারণ মানুষ আমাকে ভালো মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করবে? আপনি নিজে কি আমাকে ভালো মানুষ হিসেবে গ্রহণ করবেন?

স্যার: কখনো না, জন্মদাতা কেই যদি তুমি ভক্তি না করে তাহলে তুমি কিসের ভালো মানুষ।

আমি: হ্যাঁ, এই যে লাইনে কথা বলছেন। আল্লাহ পুরো মহাবিশ্ব আমাদের জন্য সৃষ্টি করলো, পরিমিত অক্সিজেন ফুসফুসে প্রতিসেকেন্ড সাপ্লাই দিলো, নিয়মিত শাকসবজি এবং গবাদি পশুর ব্যবস্থা করলো, পৃথিবীতে ফিল্টার করা আলো পারফেক্ট মাধ্যকর্ষণ এর ব্যবস্থাপনা করলো, ১১৮ টা মৌল দিয়ে আমাদের পৃথিবীর গঠনশৈলী সামঞ্জস্যপূর্ণ করলো, আপনি যার নিয়ামত খেয়ে দেয়ে প্রতি মিলি সেকেন্ড বেঁচে আছেন তাকেই যদি আপনি বিশ্বাস না করে মানবসেবাই মুক্তির পথ মানেন তাহলে এটা নেমোখারামি, নির্বোধতার পরিচয় ছাড়া কিছুই না। 

স্যার: হুম......! এটা মোটামোটি যৌক্তিক বলছো।

আমি: আরও ভালোভাবে আপনাকে বুঝিয়ে দেই! আচ্ছা, আগে বলুন তো জান্নাত কে সৃষ্টি করেছে? জান্নাতের মালিক কে?

স্যার: তোমাদের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ মালিক, সৃষ্টিকর্তা।

আমি: এখন আপনি জান্নাতের মালিককেই যদি মালিক হিসেবে স্বীকৃতি তা দেন, তাকে অন্তর থেকে বিশ্বাস না করেন, তাহলে কিভাবে আপনি আশা করেন যে তিনি আপনাকে দুনিয়াতে করা মানবসেবার বিনিময়ে জান্নাত দিয়ে দিবেন? তাও আবার অনন্ত কালের জন্য! 

আপনার ভালো কাজের উদ্দেশ্যই যদি উপরওয়ালাকে সন্তুষ্ট করা না হয়ে থাকে, তাহলে কোন কারণে উপরওয়ালা আপনাকে চিরস্থায়ী সন্তুষ্টি দান করবেন? 

স্যার: ওহ!

অন্যদিকে, মাদার তেরেসা বা টমাস আলভা, ওরা খ্রিষ্টান ছিলো। ইসা (আঃ) নবীকে সৃষ্টিকর্তার পুত্র হিসেবে বিশ্বাস করে আল্লাহকে অসন্মান করেছে, স্রষ্টাকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, স্রষ্টাকে সৃষ্টির সমপর্যায়ে আনছে। এসবের পরেও আপনি কিভাবে আশা করেন, মহিমাময় সর্বশক্তিমান আল্লাহ তার সম্পর্কে কটূক্তি করা, ভুল ভ্রান্তি ভরা বিশ্বাস করা এক মানুষকে মানবতা প্রচার করার জন্য চিরসুখময় জান্নাত দিয়ে  দিবেন?

স্যার: আচ্ছা ঠিক আছে, বুঝলাম। তবে তোমাদের নবী মুহাম্মদ এর বাবা আবদুল্লাহ, মুহাম্মদ কে জন্ম দিয়েই যদি জান্নাতে যেতে পারে তাহলে মাদার তেরেসা কেনো জান্নাতে যেতে পারবে না কেনো পুরো মানবজাতির মনে মানবতাবাদী মনোভাবের জন্ম দিয়ে? অথচ নবী মুহাম্মদ মধ্যপ্রাচ্যে এসেছিলেন মানবতা প্রচার করার জন্যে। 

আমি: নবীজীর বাবা আবদুল্লাহ নবীজীকে জন্ম দিয়ে জান্নাতে যাবে না বরং তিনি জান্নাতে যাবেন তার সঠিক বিশ্বাসের জন্য। আর আপনি মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাচা আবু তালেব কে চিনেন? যে ব্যক্তি নবীজীর আট বছর বয়স থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পুরো ৪২ বছর সর্বশেষ সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর দেখাশুনা করেন। নিজের কাছে আগলে রেখে বড় করেছে, তার ভরণ পোষণ দায়িত্ব নিয়েছে। 

আবু তালেবের কাছে নবীজীর প্রায় পুরো শৈশব কাল কাটে। কুরাইশদের ষড়যন্ত্র থেকে, বিভিন্ন বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করে। সাহায্যের যেই হাত নবীর আট বছর বয়সে বাড়িয়ে দেয় সে হাত নবীজীকে পঞ্চাস বছর পর্যন্ত আগলে রাখে। আবু তালেব তার জীবনের অধিকাংশ সময় নবীজীকে রক্ষা করতে ব্যয় করেছিলেন। কিন্তু তিনি ইসলামের প্রতি ইমান আনে নি! নবীজী আবু তালেব কে মৃত্যুর আগে শেষ প্রস্তাবও দেন। একবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে তাকে জান্নাতে নেওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে অনুরোধ, সাফায়ত করবেন নবীজী। তবুও আবু তালেব বাপ দাদার বংশমর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য আল্লাহকে স্বীকার করে নি। চাচার মৃত্যুর পর কষ্টভরাক্রান্ত মুহূর্তে যখন চাচার জন্য দোয়া করতে মনস্থির করলেন নবীজী, তখন আল্লাহ আয়াত নাজিল করেলেন:

"আত্মীয়-স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য ন্যয়সংগত নয়। যখন এটা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে, নিশ্চিতই তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।" (সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত ১১৩)

আপনি কি বিষয়টা বিশ্বাস করতে পারছেন, একে তো চাচা মারা গেছেন, তার মাঝে ইমান এনেও মরলেন না, আবার সেই সাথে চাচা জাহান্নামে যাবেন তার ইঙ্গিতও সাথে সাথে বলে দিলেন সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ। আর আপনি বলছেন আল্লাহ স্বার্থপর, শুধু মুসলিমদের দেখে। আল্লাহ তো তার বন্ধু, সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বরের সাথেও আমাদের ন্যায়পরায়নতা সমঝোতার দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।

স্যার, লুত নবীর স্ত্রী, সাড়ে ' বছর দাওয়াত দেওয়া নুহ নবীর স্ত্রী সন্তান; ইব্রাহিম নবীর বাবা এরা সবাই জাহান্নামে যাবে শুধুমাত্র একটি কারণে, তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করেনি বলে। আল্লাহ বলেন: 

"যারা কুফরী করে, আল্লাহ তাদের জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করছেন নূহের স্ত্রী লূতের স্ত্রীর, তারা ছিল আমাদের বান্দাদের মধ্যে দুই সৎকর্মপরায়ণ বান্দার অধীন। কিন্তু তারা তাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। ফলে নূহ লূত তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি হতে রক্ষা করতে পারলেন না  এবং তাদেরকে বলা হল, তোমরা উভয়ে প্ৰবেশকারীদের সাথে জাহান্নামে প্ৰবেশ কর।" (সূরা আত-তাহরিম, আয়াত ১০)

আল্লাহ বিন্দু পরিমাণের স্বার্থপর নয়, বরং তিনি একহাজার পারসেন্ট ন্যায়পরায়ণ, সমজোতাকারী। একজন মুমিন মুসলিম যদি টানা ৮০ বছর ইসলামের দাওয়াত প্রচারের কাজ করে এবং মৃত্যুর এক সেকেন্ড আগেও যদি আল্লাহকে অস্বীকার করে মারা যায় তাহলেও তার সব আমল আল্লাহ ধুলোয় মিশিয়ে দিবে এবং তাকে অনন্তকালের জন্য জাহান্নামে পাঠিয়ে দিবেন। বর্তমানে ইসলামে সবচেয়ে বড় ব্যক্তিত্ব বা খ্যাতিনামা ব্যক্তি কারা? ধরেন জাকির নায়েক, মওলানা তারিক জামিল কিংবা নোমান আলী খান। এদেরকে গিয়ে যদি আপনি বলেন, "তুমি মৃত্যুর এক সেকেন্ড আগে আল্লাহকে অস্বীকার করে মারা গেলে অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে।"  তাহলে তারা স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই এমন বলে দিবে যে, "হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন, সেজন্য আমি সর্বদা ইমানী হওলাদে থাকার চেষ্টা করি।" কারণ কোরআন তাদের বার বার এই কথা শিক্ষা দিয়েছে, আল্লাহ শুধু মুসলিমদের উপর স্বার্থপর নয়, তিনি নীতিবান, ন্যায়-নিষ্ঠা জান্নাতের শর্তবালীর উপর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাকারী।

"আর কেউ ঈমানের সাথে কুফরী করলে তার কর্ম অবশ্যই নিস্ফল হবে এবং সে আখেরাতে ক্ষীতগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।" (সূরা আল মায়িদ আয়াত, )

"আর যদি তারা শির্ক করত তবে তাঁদের কৃতকর্ম নিস্ফল হত।" (সূরা আন আম আয়াত, ৮৮)

"যারা তাদের রব-এর নিদর্শনাবলী তাঁর সাথে তাদের সাক্ষাতের ব্যাপারে কুফরি করেছে। ফলে তাদের সকল আমল নিষ্ফল হয়ে গেছে" (সূরা আল কাহফ, ১০৫)

বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো ছাত্র, SSC, HSC পরীক্ষায় পুরো দেশে প্রথম স্থান অধিকারীও যদি একটা কোম্পানিতে জয়েন করতে চায় তাহলে তাকে ফরম পূরণ করতে হবে, কিছু শর্ত পূরণ করে নিতে হবে সবার আগে। আল্লাহ পুরো মানজাতির মধ্যে এমন সব ব্যক্তিদের জান্নাতে দিবেন না যারা বিখ্যাত, মহৎ, শক্তিশালী কিংবা রূপসী ছিলেন। বরং তারেই জান্নাত দিবেন যারা জান্নাতে যাওয়ার সর্বপ্রথম এবং মৌলিক শর্তপূরণগুলো পূরণ করে পরলোকগমন করেছেন। 

চারিদিকে পিনড্রপ সাইলেন্স, সবাই কান খাড়া করে আমার দিকে দৃষ্টিচারণ করছে। স্যার এর মাঝে আরেকটা ক্ষুদেপ্রশ্ন আবিষ্কার করলেন।

স্যার: আরেকটা বিষয় কেমন যেনো হয়ে গেলো। সে অমুসলিম ব্যক্তি সারা জীবন মদপান, ধূমপান, ধর্ষণ, ব্যভিচার, হত্যা, রাহাজানি করলো আর যে সারাজীবন মানবতা, মানবসেবা করেছে দিনশেষে তারা একি, সমপরিমাণ শাস্তি পাবে? গোঁজামিল লাগছে।

আমি: হা হা, ইসলাম কারো উপর কোনো ধরণের জুলুম করে না। বিন্দু পরিমাণও না, ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে নিষ্টুর খারাপ মানুষ ফেরাউন, সে থাকবে জাহান্নামের সর্বোচ্চ শাস্তির পর্যায়ে। অন্যদিকে আবু তালেব, নবীজীর প্রতি তার অবদান সহানুভূতিশীলতার জন্য তাকে জাহান্নামের লঘুতম শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু বিধান একটাই, যে আল্লাহকে অস্বীকার করেছে, সে স্থায়ী জাহান্নামী। পাপ, পুণ্য ভেদে আল্লাহ জাহান্নামে শাস্তি ব্যবস্থাপনা করে রেখেছেন। আপনার ওসব ভাবতে হবে না। 

স্যার, প্রতিনিয়ত রেগে যাচ্ছেন আমার জবাবগুলো শুনে। নিরুপায় হয়ে আমাকে এক আজগুবি প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। 

স্যার: তুমি যে এতো আল্লাহ আল্লাহ করতেছো, সৃষ্টিকর্তার কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠিয়ে দিচ্ছো। তা এই স্রষ্টা কোথা থেকে আসলো, কে এই স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে? 

আমি: প্রশ্নটা এমন যে রাঁধুনিকে কে রান্না করেছে!

স্যার: ......মানে?

আমি: আরেক ভাবে বললে, চিত্রশিল্পীকে কে চিত্রায়িত করলো? যে এই মহাবিশ্বকে গণিত পদার্থবিজ্ঞানের রংতুলি সরঞ্জাম দিয়ে নিপুণ নিখুঁত করে আঁকলো তাকে আবার কে তৈরী করতে পারে? বলেন! স্রস্টাকে যদি কেউ সৃষ্টিই করে থাকে তাহলে তো আর স্রষ্ঠা থাকে না, সৃষ্টিই হয়ে যায়! স্রস্টা তো তাকেই বলে যাকে কেউ সৃষ্টি করেনি বরং তিনিই সবকিছু সৃষ্টির স্রষ্ঠা! এতটুকু বোধগম্য হয়না স্যার? আসলে স্রস্টাকে কে সৃষ্টি করেছে এটা একটি ভাষাগত মারপ্যাঁচ, যা সহজে ধরতে পারে না অনেকে।

স্যার চসমা খুলে মাথায় হাত দিয়ে ভাবছে। জাবেরুল আমার দিকে হাস্যউজ্জ্বল মুখে তাকিয়ে রইলো, আজকে রসমালাই ট্রিট দিবে মনে হয়!



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন