মুমিন ভাই, বোনরা! আশা করি একটু সময় নিয়ে পড়বেন, ইনসাআল্লাহ!
সহিহ্ মুমিন: আসসালামু আলাইকুম, ভাই!
নির্ভেজাল নাস্তিক: ভাই, আল্লাহ তো নাই! ওনার শান্তি বর্ষণ দিয়ে কি করবো?
মুমিন: আপনি শিউর আল্লাহ নেই?
নাস্তিক: এখানে শিউর হওয়ার কি আছে? যাকে কেউ দেখে নাই, শুনে নাই, ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করে নাই তাকে আমি কেনো বিশ্বাস করবো?
পাশেই লাইটের সুইচ ছিলো, সুইচ ছিড়ে তার বের করে মুমিন ভাই বললো, ভাই এটা ছুয়ে দেখেন।
নাস্তিক: না না, আমি ছোঁবো না, এটায় কারেন্ট আছে!
মুমিন: কই আমি তো কোনো কিছু দেখতে পাচ্ছি না, শুনতে পাচ্ছি না, অনুভব করতে পাচ্ছি না।
নাস্তিক: হা হা! তারটা ধরেন তাহলেই অনুভব করতে পারবেন!
মুমিন: আপনি পৃথিবীর সৃষ্টিগুলোকে একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখেন তাহলেই স্রষ্টাকে অনুভব করতে পারবেন।
নাস্তিক: হা হা! কি বলে? সব কিছু কিভাবে এসেছে তার বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা আছে, ভাই।
মুমিন: কিভাবে এসেছে?
নাস্তিক: এক প্রাণী থেকে আরেক প্রাণীতে বিবর্তত হয়ে এসেছি। এক কোষী জীব থেকে মাছ, মাছ থেকে গিরিগিটি, গিরগিটি থেকে ইদুর, ইদুর থেকে বানর, বানর থেকে মানুষ।
মুমিন: মাথা ঠিক আছে, ভাই? এই বিবর্তন কিভাবে সম্ভব?
নাস্তিক: কেনো?নেচারাল সিলেকশন, প্রাকৃতিক নির্বাচন দিয়ে !
মুমিন: প্রাকৃতিক নির্বাচন কে করে?
নাস্তিক: প্রকৃতিই করে।
মুমিন: প্রকৃতির কোনো হাত পা মাথা আছে? এটা কি দেখা যায়, শুনা যায়, অনুভব করা যায় কোনো ভাবে? এটা কিভাবে বুঝে এই প্রাণীকে এইভাবে বিবর্তন করতে হবে?
নাস্তিক: আসলে ভাই, বিবর্তন হলো এলোমেলো উদ্দেশ্যের লাভ জনক প্রক্রিয়া!
মুমিন: বাহ, কি যুক্তি! যাই হোক, মূল কথায় আসি। আমরা একটু আমার আর আপনার দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্বাসভঙ্গি পাশাপাশি রেখে তুলনা করি! দেখি কোনটি অধিকতর মানসম্মত, গ্রহণযোগ্য! ধরুন, এলাকার চৌরাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানে ভিন দেশ থেকে আসা এক লোকের সাথে আমার দেখা হলো। আমাকে দেখে কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল লোকটা:-
ভিনদেশি: আচ্ছা, ভাই আমরা কোথা থেকে এসেছি?
আমি: আমরা আল্লাহ্ তায়ালার জান্নাত থেকে এসেছি।
ভিনদেশি: আমাদের শুরু কাদের দিয়ে?
আমি: এক জোড়া মানবদেহ আদম (আঃ) হাওয়া (আঃ) দিয়ে।
ভিনদেশি: আমরা পৃথিবীর বাকি প্রাণীগুলো থেকে আলাদা কেনো?
আমি: সয়ং সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে আমাদের বানিয়েছেন যে!
ভিনদেশি: আমরা এখানে কেনো এসেছি?
আমি: আল্লাহকে কে ভালোবাসে, ভয় করে তা সঠিকভাবে পরিক্ষিত করার জন্য এসেছি।
ভিনদেশি: আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি?
আমি: তোমার আমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করে আবার সেই জান্নাতে ফিরে যাওয়া।
ভিনদেশি: আমাদের সৃষ্টি করে আল্লাহর লাভ কি হয়েছে?
আমি: রাজপ্রাসাদের রাজার আদেশ প্রজা পূরণ করলে রাজা যেমন খুশি হন তেমনি আল্লাহর আদেশও বান্দা যখন পূরণ করলে আল্লাহও খুশি হন।
ভিনদেশি: ভালো কাজের সংজ্ঞা কি?
আমি: যাতে কল্যাণ আছে তাই ভালো কাজ।
ভিনদেশি: আর খারাপ কাজের সংজ্ঞা?
আমি: যা সৃষ্টিকর্তার পথ থেকে পথভ্রষ্ট করে, তার পথে অটল থাকতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে তাই খারাপ কাজ।
ভিনদেশি: আল্লাহ দেখা দেন না কেনো? তাহলেই তো পৃথিবী সুন্দর হয়ে যায়!
আমি: আল্লাহ দেখা দিলে তো পরীক্ষার হলেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
ভিনদেশি: এই মহাবিশ্ব কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
আমি: আল্লাহ তায়ালার একটি মাত্র হুকুমে।
ভিনদেশি: এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি?
আমি: স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য প্রতিনিয়ত সৃষ্টি করা।
মাখলুককে অনিস্তত্ব থেকে অস্তিত্ব দান করা।
ভিনদেশি: পৃথিবী তো অনেক ছোট, অথচ মহাবিশ্ব বিশাল বড়। এত এত কিছু সৃষ্টি করার হেতু কি?
আমি: "এই ধরাতে আছে যত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা
তার থেকেও মহাকাশে আছে সর্বদা দীপ্তিমান তারকারাজি"
"মিট মিট এগুলো সবাই বিধাতার প্রজা"
"যাদের নেই কোনো ইচ্ছে-আকাঙ্ক্ষা"
"সর্বদা স্রষ্টার গুণগান করাই তাদের সব চাওয়া পাওয়া"
একজন নাস্তিকের দৃষ্টিকোণ থেকে ভিনদেশির সাথে আলাপ:
ভিনদেশি: আচ্ছা, ভাই আমরা কোথা থেকে এসেছি?
নাস্তিক: কোথা থেকে আবার, পৃথিবী থেকেই!
ভিনদেশি: ওহ আচ্ছা, তাহলে আমরা কাদের থেকে আসলাম?
নাস্তিক: বানর থেকেই আস্তে আস্তে বিবর্তিত হয়ে আসছি।
ভিনদেশি: আমরা পৃথিবীর বাকি প্রাণীগুলো থেকে আলাদা কেনো?
নাস্তিক: কি আর বলবো! প্রাকৃতিক নির্বাচন এবার পারফেক্ট হয়েছিলো।
ভিনদেশি: আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি?
নাস্তিক: আমাদের জীবনের কোনো মূল উদ্দেশ্য নেই। সবাই ইচ্ছাস্বাধীন। এখানেই বাঁচি, এখানেই মরি। মারা গেলেই সব শেষ।
ভিনদেশি: আমাদের সৃষ্টি করে প্রকৃতির কি লাভ হয়েছে?
নাস্তিক: না, প্রকৃতির কোনো লাভ হয় নি তো! ঐ যে বললাম, আমাদের জন্য এটা এলোমেলো উদ্দেশ্যের লাভ জনক প্রক্রিয়া!
ভিনদেশি: আপনাদের নৈতিকতার মানদণ্ড নেই?
নাস্তিক: সম্মতিক্রমে আমরা যেকোনো কিছু করতে পারি, যাতে কারো কোনো সমস্যা নেই!
ভিনদেশি: এই মহাবিশ্ব কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
নাস্তিক: বিগ ব্যাং দিয়ে!
ভিনদেশি: বিগ ব্যাং কে ঘটালো?
নাস্তিক: বিগ ব্যাং এর আগে তো কিছু ছিলো না, এটা নিজেই নিজেকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব দিছে, নিজেই নিজের ভিতরে বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে।
ভিনদেশি: কি অদ্ভুত! এই মহাবিশ্বের উদ্দেশ্য কি?
নাস্তিক: এই মহাবিশ্বের তো কোনো উদ্দেশ্যে নেই। এটা দিন দিন এনট্রপির জন্য বিশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত হচ্ছে। একদিন নিঃশ্বেসও হয়ে যাবে। খতম!
ভিনদেশি: তাহলে সবকিছুই উদ্দেশ্যহীন?
নাস্তিক: হুম, বলতে পারেন।
ভিনদেশি: আপনার বিশ্বাসভঙ্গিতে আমি বেজায় অসন্তুষ্ট। আমি তো নিজেকে একজন স্রষ্টায় বিশ্বাসী হিসেবে গ্রহণ করতে চাই! এই সৃষ্টিজগৎ তো এক স্রষ্টার নিদর্শনে মুহু মুহু করছে। তাকে অস্বীকার করা নিকৃষ্টতম অকৃতজ্ঞতা।
❒ তেমন কিছু না, নাস্তিক থেকে আস্তিক হওয়া শুধু মাত্র একটু বিবেগের খেলা!

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন